পদ্মা সেতু এখন আর কোনো স্বপ্ন নয়। প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ় চেতনায় নির্মিত পদ্মা সেতু এখন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সোপান। এ সেতুর মাধ্যমে দেশের ২১ জেলার জনগণের সাথে রাজধানী ঢাকাসহ পশ্চিমাঞ্চলের সুষ্ঠু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠছে। এছাড়া অর্থনীতির নবদিগন্তের দ্বার উম্মোচিত হবে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের সাথে সংযোগের শেষ ৪১ তম স্প্যানটি আজ বৃহস্পতিবার বসতে পারে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়ার সর্ব প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৫৩৭৪.৬২ কোটি টাকা। আর সম্ভাব্য বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছিল ২০০৮ সাল। ক্ষমতার পালাবদলে তখন বন্ধ হয়ে যায় সেতুর নির্মাণ কাজ। পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরুতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র, দুর্নীতির অভিযোগ আর বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ প্রদান থেকে সরে যাওয়াসহ কোনো প্রতিবন্ধকতা বাধা হতে পারেনি এ সেতু নির্মাণে। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়ানে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৭ সালে ৩০ সেপ্টেম্বরে জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়। তারপর একে একে বসতে থাকে পিলারের ওপর স্প্যান। দৃশ্যমান হতে থাকে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো। সর্বশেষ গত ৪ ডিসেম্বর বসে ৪০ তম স্প্যান। পদ্মার এপাড় ওপাড় সংযোগ করতে আর বাকী থাকছে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যানটি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। পদ্মার মাঝ নদীতে ৪১ তম স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পদ্মা সেতুর অবকাঠামো। দেশের সর্ব বৃহৎ মেঘাপ্রকল্প পদ্মা সেতুতে পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর সাথে সাথে রোডওয়ে স্লাব বসানোর কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। পুরো পদ্মা সেতু নির্মাণে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাব বসানো হবে। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩০০টি রোডওয়ে স্লাব বসানো হয়েছে।
অনেক চড়াউ উৎরাই পার করে নির্মিত পদ্মা সেতু দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পণ্য আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে দেশের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মংলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক বৃদ্বি করবে। এতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড আরও গতিশীল হবে। ২০২১ সালের বিজয়ের মাসে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার জনগণের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে আর যাতায়াতের দুর্ভোগের অবসান হবে বলে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন