শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনে পরিণত হয়েছে: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৫৩ পিএম

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিজয়ের ৪৯ বছর পরও দেশের বর্তমান বাস্তবতা হলো, স্বাধীন দেশের নাগরিকরা নিজ দেশেই পরাধীন, শুধু নিজ দেশে পরাধীনই নয়, ধীরে ধীরে দেশের ভৌগলিক স্বাধীনতাকেও হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে। একটি রাষ্ট্র কতটা উন্নত, সভ্য ও টেকসই, সেটি নির্ভর করে একটি রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা স্বাধীন তার ওপর। কোনো রাষ্ট্র যদি উল্টো পথে চলার চেষ্টা করে কিংবা সরকার যদি স্বৈরাচারী কিংবা গণবিরোধী হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সরকারকে সঠিক ধারয় ফেরাতে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু বাংলাদেশে একজন ব্যক্তির ক্ষমতালিপ্সার কারণে বর্তমানে রাষ্ট্রের প্রতিটি সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি রাষ্ট্রের স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে তার একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ বিশ্ববাসী দেখেছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর। আমেরিকার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট অসীম ক্ষমতার অধিকারী হলেও দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো দেখিয়েছে আইনগত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রেসিডেন্টের চেয়েও শক্তিশালী, স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। অথচ বাংলাদেশে ঠিক এর উল্টো চিত্র। নিজেদের সাংবিধানিক দায়িত্ব ভুলে গিয়ে সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে।
শিক্ষার্থীদের অটো-পাস নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় চালু রেখেছে। অনলাইন অথবা অন্য কোন বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষার হাব নামে খ্যাত দেশগুলো যেমন গ্রেট ব্রিটেন, ভারত, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা আমেরিকাসহ কোন দেশেই আজকের বাস্তবতায় অটো পাস দেওয়া হয়নি। সকল দেশেই শিক্ষার্থীর মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষার বিকল্প শুধু পরীক্ষাই রাখা হয়েছে। অন্য কিছু নয়। কিন্তু বাংলাদেশ চলছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে-উল্টো রথে। সব চলছে করোনা ভাইরাসের অজুহাতে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা রয়েছে। সরকার সারাক্ষণ ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান দিচ্ছে তাহলে বাসায় থেকে কিংবা অন্য কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে কিভাবে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে পারে সে ব্যাপারে সরকার কি আদৌ কোন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে? তা না করে অটো পাশ আর ফটোকপির পাশ এসব করে সরকার একটি প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশের লক্ষ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই বলেই লাখ লাখ শিক্ষার্থী অন্ধকারের অতল গহব্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ অফিস, আদালত, শিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে।
করোনা চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। করোনা নিয়ে সরকার তথ্য গোপন করে অতি সামান্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা নিরাপদে আইসোলেশনে থেকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষ বিনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন, হাসপাতালের বেড ইত্যাদির অভাবে কাতরাচ্ছে। ঢাকাসহ কোথাও আইসিইউ খালি নেই। অক্সিজেনের অভাবে মায়ের কোলেই সন্তান মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীকে ফেরত দেয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকারের কোন দায়িত্ব নেই। সরকার যেন চোখ বুজে ধ্যান করছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md. Jakir Hossain ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫১ পিএম says : 0
Right Right
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন