শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জলিল দুয়ারীর বিরুদ্ধে উল্টো মামলার নির্দেশ হাইকোর্টের

আসামির বিরুদ্ধে বাদীর সাফাই সাক্ষ্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

জামাতার জামিন শুনানিতে সাফাই সাক্ষ্য দিতে এসে নিজেই ফেঁসে গেলেন শ্বশুর জলিল দুয়ারি। কারণ, এই জামাতার বিরুদ্ধেই বছর দুই আগে মেয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা করেছিলেন তিনি।

জামাতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল বলে দাবি করায় উল্টো শ্বশুরের বিরুদ্ধেই মামলা করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে আসামি জামাতা মো. কাউসার গাজীকে জামিন দেয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম এবং মো.বদরুজ্জামানের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আসাদ মিয়া সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড.বশিরউল্যাহ। পরে এ বিষয়ে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পটুয়াখালীতে খুন হয় সাথী আক্তার নামের এক নারী। স্বামী মোহাম্মদ কাউসার গাজী নির্মমভাবে তাকে হত্যা করেন বলে অভিযোগ করে সাথীর পরিবার। এ ঘটনায় পটুয়াখালীর সদর থানায় নিহত সাথী আক্তারের বাবা জলিল দুয়ারি বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় আসামি কাউসার গাজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

এদিকে ওই ঘটনায় নিহত সাথীর মেয়ে শিশু (৫) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে সে বলে, আমার আম্মুকে আব্বু লাঠি দিয়ে মাথায় এবং দাদা শরীরে আঘাত করে হত্যা করে। পরে ছাগলের রশি দিয়ে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে। ময়নাতদন্তেও আঘাতের পর মৃত্যুর বিষয়টি প্রমাণিত হয়। কিন্তু দুই বছর পর এসে জলিল দুয়ারি এফিডেভিট সহকারে হাইকোর্টকে জানান, তিনি প্ররোচিত হয়ে এ হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় কাউসার গাজীকে অব্যাহতি দিয়ে জামিন দিলে তার কোনও আপত্তি নেই। এ সময় শুনানিকালে হাইকোর্ট বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করা ঠিক হয়নি। মিথ্যা এফিডেভিট দিয়ে আসামির জামিনে সহযোগিতা করেও জলিল দুয়ারি অপরাধ করেছেন।

তাই এমন ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেই লক্ষ্যে জড়িতদের শাস্তির আনা প্রয়োজন। আদালত বলেন, প্রায়ই জামিন পাওয়ার জন্য আসমিপক্ষ এ ধরণের প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে জামিনের চেষ্টা করে। এ ধরণের ঘটনা বন্ধ হওয়া উচিত। তাই এ ঘটনায় মামলার বাদী জলিল দুয়ারির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।
এর আগে মামলার বাদী জলিল দুয়ারি এফিডেভিটের মাধ্যমে আদালতে বলেন, আমার মেয়ে সাথী আক্তারের গর্ভে এবং আমার মেয়ে জামাই মো. কাওসার গাজীর ঔরসে শিশু কন্যা (৫) ও ছেলে শিশুর (১) জন্ম হয়। আমার মেয়ে সাথী আক্তার জামাইকে ভুল বুঝিয়ে তার সঙ্গে অভিমান করে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে অন্যের দ্বারা প্ররোচিত না হয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। উক্ত আত্মহত্যায় আমার মেয়ের জামাই ও তার বাবা-মা জড়িত না। কিন্তু পরবর্তীতে কিছু কুচক্রী লোকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করি। যা সত্য নয়। আমার মেয়ের জামাই দুটি নাবালক সন্তানের পিতা। ওদের ভবিষৎ দেখাশোনার জন্য মামলাটি পরিচালনা করা আমার আবিশ্যকতা নেই। মামলা থেকে আসামিকে অব্যহতি দিলে আমার আপত্তি নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন