অধ্যাপক কাজী সামশুর রহমান
আপন পীরের নির্দেশ মানা ফরজে আইন এ কথা অনুধাবন ও বিশ্বাস করতেন বলে হুযূর ক্বিবলা সৈয়্যদ আহমদ শাহ রহমাতুল্লাহি আলায়হি দীর্ঘ ১৬ বছর দেশে যাননি। এমনকি তাঁর প্রিয় প্রথম সন্তান সৈয়্যদ মুহাম্মদ সালেহ’র ইন্তেকালের খবর পেয়েও পীরের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে দেশে যাওয়া হয়নি। সোবহানাল্লাহ। চট্টগ্রামের ভাইয়েরা এমনকি ইমামে আহলে সুন্নাত হযরত গাজী শেরে বাংলা আল্লামা আযিযুল হক আল্কাদেরী সাহেব রেঙ্গুন সফরে গেলে হুযূর ক্বিবলার সাথে দেখা করে চট্টগ্রাম আসার অনুরোধ করেন। ১৯২৫ সালে তিনি পীরের নামে আনজুমানে শুরায়ে রহমানিয়া নামক একটি সংগঠন করেন। শরিয়ত-ত্বরীকতের যাবতীয় কার্যাদি এর মাধ্যমেই তখন সম্পন্ন হতো। ১৯৩৬ সালে ১৬ বছর পর তিনি স্বদেশে যান। ইতোমধ্যে হযরত খাজা আবদুর রহমান চৌহরভী (রহমাতুল্লাহি আলায়হি) ইন্তেকাল করেন (ইন্না....রাজেউন)।
স্বদেশ যাবার পথে তিনি কিছুদিনের জন্য প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে অবস্থান করেন ভাইদের অনুরোধে। সে সময় থেকেই চট্টগ্রামের মানুষ হুজুর ক্বিবলার সাথে পরিচিত হয় এবং সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়া ত্বরিকায় হুযূর ক্বিবলার হাতে বাইয়াত গ্রহণ শুরু হয়। ১৯৪১ সালে সুদীর্ঘ ২১ বছর রেঙ্গুনে শরীয়ত ত্বরিক্বতের খেদমত করার পর হুজুর বিদায় নিয়ে স্বদেশে ফিরে যান। প্রতি বছর চট্টগ্রাম সফর শুরু করেন তখন থেকেই। ১৯৫৮ সালে চট্টগ্রাম সফরকালে আনজুমানে শুরায়ে রহমানিয়া’র নাম পরিবর্তন করে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া রাখা হয়। পরে এটা ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধিত হয়।
১৯৪২ সালে হুজুর ক্বিবলা ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আবদুল খালেক সাহেবের গ্রামের বাড়ি রাউজান থানার সুলতানপুর গ্রামে সফরে যান, সে সময় সেখানে সুলতানপুর ফোরকানিয়া মাদ্রাসা নামে একটি ছোট্ট প্রতিষ্ঠান ছিল। হুযূর ক্বিবলা বরাবরই দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করতেন, সফরকালে তাঁকে ঐ ছোট্ট মক্তব প্রতিষ্ঠানটির ভিত্তি স্থাপন করার অনুরোধ জানানো হলে তিনি সানন্দে নতুন করে ভিত্তি দেন। বর্তমানে ঐ ছোট্ট মক্তবটি রাউজান দারুল ইসলাম ফাযিল মাদ্রাসা হিসেবে সুনামের সাথে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট কর্তৃক একটি শক্তিশালী কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।
১৯৪৯ সালের ডিসেম্বর মাস। তৈলারদ্বীপের মরহুম বজলুল করিম চৌধুরী (হুযূরের খলীফা) মোবারক আলী চৌধুরী, মাওলানা এজহার উদ্দীন (হুযূরের খলীফা) হুযূর ক্বিবলাকে টইটং-পুঁইছড়ি ও শেখের খীল প্রভৃতি স্থানে সফরে নিয়ে যান। এই শেখেরখীলের স্থানীয় বাসিন্দারা আসরের নামাযের পর হুযূরের সফর উপলক্ষে এক মিলাদের আয়োজন করেন। এবং একজন নামকরা আলিমকেও দাওয়াত দেন। তিনি ১৫/২০ জন সাথে নিয়ে মাহফিলে আসেন, মিলাদ মাহফিলে প্রথমে যে দুরূদ শরীফ পাঠ করতে হয়, তা তিনি না করে ওয়াজ শুরু করে দিলেন। পরে হুযূর ক্বিবলা বক্তব্য শুরু করার পূর্বে ‘ইন্নাল্লাহা....তাসলিমা’ আয়াত খানা পাঠ করলেন তখন দেখা গেল সফর সঙ্গী ১৫/২০ জন ছাড়া আর কেউই দুরূদ পাঠ করল না।
এশার নামায মসজিদে আদায় করে হুযূর শুরু করলেন দরুদ পাঠে অনীহা প্রকাশকারীদের মুখোশ উন্মোচন করার কাজ। মুখের ভাষা বয়ানে মনে হচ্ছিল তাদের বিরুদ্ধে খোলা তরবারি চালাচ্ছেন। এত বড় মাহফিলে কেউ দুরূদ শরীফ পড়ল না? এখান থেকে শুরু হলো সুন্নীয়তের আন্দোলন। শেখের খীলেই আহলে সুন্নাতের বীজরোপন করা হলো। সে রাতে হুযুরের চোখ, মুখ দিয়ে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছিল। রাতে কারো খাওয়া-দাওয়া হয়নি। সফর শেষ করে শহরে ফিরে এসে শুরু হলো বিরোধীদের বিরুদ্ধে ঈমান বাঁচানোর লড়াই এ সময় একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবের সাথে নির্দেশ দিলেন- ‘কাম করো, ইসলাম কো বাচাও, দ্বীন কো বাচাও, সাচ্ছা আলেম তৈয়ার করো।’
১৯৫০-৫১ সালে বিরোধী মতবাদের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হওয়ার জন্য বিভিন্ন মসজিদে বক্তব্য দেয়া শুরু করলেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ভিত্তিক শিক্ষার জন্য জমি প্রয়োজন বিধায় হুযূর জমি খোঁজার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, ‘‘শহর ভী না হো, গাঁও ভী না হো, লেকিন শহরছে দুর ভী না হো। মসজিদ ভী হু, সাথ তালাব ভী হু’’ অনেক জমি দেখার পর নাজিরপাড়ার এ জমি পছন্দ হলো ১৯৫২ সালে। নাজিরপাড়ার বাসিন্দা মরহুম সৈয়্যদ মেম্বারের পিতা মরহুম মুনাফ খলীফা রেঙ্গুনে হুযূর ক্বিবলার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেন। হুযূর ক্বিবলার খাস নেগাহ্ করম তার ওপর ছিল বিধায় তিনি আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভ করেন। মাঝে মধ্যে তিনি হুযূর ক্বিবলা সম্পর্কে কিছু কিছু অলৌকিক ঘটনা বর্ণনা করতেন। একদিন ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক সাহেব রহমাতুল্লাহি আলায়হির বাসায় এশার নামাযের পর তিনি হুযূরকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘হুযূর আপ নামায মে যব রুকু ও সাজদা মে যাতে, তো সারে চাঁটগাম আপকা সাথ রুকু আওর সাজদা মে যাতে হেঁ। হুযূর ক্বিবলা মুনাফ খলীফা সাহেবকে সমীহ করতেন। হুযূর সব সময় নিজেকে প্রকাশ করতে সংযত থাকতেন। মাদ্রাসার জন্য যখন জমি খোঁজা হচ্ছিল সে সময় মুনাফ খলীফা একদিন এসে হুযূরকে বললেন, হুযূর নাজিরপাড়া সে ইলম কা খুশবু আতা হ্যায়। হুযূর ক্বিবলা পূর্ব হতেই এ জমি পছন্দ করে রেখেছেন বিধায় বলেছিলেন,‘শহর ভী না হো, গাঁউভী না হো।’ তাঁর প্রস্তাব হুযূরের পছন্দ হলো। হুযূর সরেজমিনে দেখে বললেন, ‘হ্যাঁ ইহাছে ইলম কা খুশবু আতা হ্যায়। নাজিরপাড়া নিবাসী মুহাব্বতের ভাই মরহুম আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম সওদাগর (আনজুমান ট্রাস্ট সেক্রেটারী আল্হাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সাহেবের পিতা) ও জমির মালিক মরহুম হযরত মিয়ার (আনজুমান সদস্য কামাল উদ্দীন চৌধুরী এর পিতা) সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেন। ১৯৫৪ সালে হুযূরের হাতে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার ভিত্তি দেয়া হলো। এ মাদ্রাসা এখন উপমহাদেশে খ্যাতি লাভ করে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। জামেয়ার আদলে চট্টগ্রাম ঢাকাসহ দেশব্যাপী ও উপমহাদেশে অসংখ্য মাদ্রাসা, মসজিদ, খানকাহ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এ মাদরাসার বিশেষত্ব হলো শরিয়ত ও ত্বরিকত উভয় ধারার পাঠ দান করা হয় শিক্ষার্থীদের। যাতে করে শিক্ষার সমাপনান্তে দ্বীন মাযহাব-মিল্লাতের খেদমত আঞ্জাম দিতে ও নবী-অলি বিদ্বেষীদের ভ্রান্ত আক্বিদার স্বরূপ উন্মোচন করে সরলপ্রাণ মুসলিম মিল্লাতকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও নীতির উপর অবিচল রাখার কঠিন সম্পন্ন করতে পারে। মাওলানা এজাহার উদ্দীনের উসিলায় মীলাদের বাহানায় আমরা একটি ‘মসলকে আ’লা হযরত’র আদর্শ ভিত্তিক মাদ্রাসা পেয়েছি বিধায় আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতভুক্ত হতে পেরেছি। নবী-অলি প্রেমিক হবার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে। নতুবা নবী-অলি বিদ্বেষী বাতিলপন্থিদের ভিড়ে আমরাও হয়তো বিপথগামী হয়ে যেতাম। যদিও বা পরিচালনার দায়িত্ব আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট এর উপর ন্যস্ত, তথাপি এর পিছনে প্রিয় নবী ও আওলাদে রাসূলগণের জাহেরী-বাতেনী শক্তিই মূল পরিচালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। হুযূর মাদরাসা প্রতিষ্ঠালগ্নে কয়েকটি অতি মূল্যবান নসিহত করেন।
হুযূর বলেছেন, অত্র মাদ্রাসার ভার প্রিয় নবী নিজেই নিয়েছেন। সোবহানাল্লাহ! ইয়ে জামেয়া কিস্তিয়ে নুহ (আলায়হিস্ সালাম) হ্যায়। হযরত নূহ আলায়হিস্ সালাম-এর কিসতি (নৌকা) সদৃশ, এ মাদ্রাসার খেদমত যারা করবে তারা ঐ কিসতির যাত্রীদের মতো মুক্তি পাবে। হুযূর আরো বলেন ‘মুঝে দেখনা হ্যায়তো, মাদ্রাসাকো দেখো’ ‘মুঝছে মহব্বত হ্যায়তো মাদ্রাসাকো মহব্বত করো’ ‘মাদরাসা কেলিয়ে মান্নত করো, মান্নত পুরা হোনেছে ওয়াদা পুরা করো।’ ‘চেনা-অচেনা হাজার হাজার নবী অলী প্রেমিক আল্লাহর বান্দা লক্ষ লক্ষ টাকা দান খয়রাত করে যাচ্ছে এবং আল্লাহ্ তা’আলা তাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ করছেন।’ মসলকে আ’লা হযরত-এর আক্বীদার উপর এই মাদ্রাসার কার্যক্রম বিস্তৃত। এখানকার শিক্ষার্থীরা একজন খাঁটি নবী অলী প্রেমিক মন নিয়ে দেশ দেশান্তরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর পক্ষে জেহাদ করে যাচ্ছে।
হুযূর ক্বিবলা সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি রহমাতুল্লাহি আলায়হির জীবনটাই ছিল কারামতে ভরপুর। অসংখ্য কারামত লক্ষ্য করা গেছে তাঁর মধ্যে। হুযূর নিজেকে সবসময় আড়াল করে সংযত হয়ে থাকতে পছন্দ করতেন। তিনি প্রায়শঃ বলতেন, ‘বাবা হাম এক মোল্লা নাচীয হুঁ, ‘হামছে আপ লোগো কো কেয়া ফায়দা মিলেগা?’’ পরক্ষণে বলতেন ‘হাঁ হামকো সাচ্চা পীর মিলা, সাচ্চা রাহবার মিলা, উনকি যরিয়ে মখলুক কা খেদমত করনেকা কোশিশ করতা হুঁ। আবার কখনো তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ মুরীদ পেলে জোশের সাথেই বলতেন ‘‘না হাম পীর সে জুদা হুঁ, না পীর হামছে জুদা হ্যায়।’’ তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে কারো কোন দ্বিমত নেই। আরো বলতেন, ‘‘সাচ্চা সঙ্গত করো (ওয়াকুনু মাআস্ সোয়াদেকিন)।’’
প্রিয় দৌহিত্র আওলাদে রসূল গাউসে জমান হযরতুল আল্লামা আলহাজ্ব সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মুদ্দাজিল্লুহুল আলী)কে সাথে নিয়ে হুযূর ১৯৫৮ সালে চট্টগ্রাম সফরে আসেন (এটা ছিল হুজুরের শেষ সফর)। প্রায় সাত মাস চট্টগ্রামে অবস্থান করে ৩০/৩৫ জন মুরীদান সঙ্গে করে হুযূর প্রিয় নাতিসহ জাহাজযোগে হজ্ব পালনার্থে জেদ্দার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ত্যাগ করেন। বহু বছর পর হুজুর পুনর্বার হজ্বে গেলেন। নাতি তাহের শাহকে নিয়ে হজ্বে যাবার এক গুরুত্বপূর্ণ কারামত তখন প্রকাশ পেয়েছিল। যখন হুজুর ১৯৫০/৫১ সালে হজ্ব সমাপনান্তে আকা-মওলা নুরে মুজাচ্ছম, তাজেদারে মদীনা হুযূর পুরনুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র রওজা মুবারকে বিদায়ী সালাম আরজ করছিলেন সে সময় প্রিয় নবীজির ৩৯তম অধঃস্তন সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ রহমাতুল্লাহি আলায়হিকে আগামীবার হজ্বে আসার সময় তাঁর নাতি সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহকে নিয়ে আসার জন্য আদেশ হল। নাতি নাবালক থাকায় সাবালক হওয়া অবধি তিনি হজ্বে যাননি। নাতির বয়স যখন হজ্বে যাবার সময় হলো তখনিই হুযূর নাতিকে নিয়ে হজ্বে (১৯৫৮) গেলেন। এ হজ্ব হুযূরের বিদায় হজ্ব ছিল। হজ্জে গিয়ে নাতিসহ প্রিয় নবীর রওজায় সালাম আরয করলেন এবং পবিত্র আরাফাহ্ ময়দানে প্রিয় নাতিকে উপস্থিত পীর ভাইদের সম্মুখে আপন হাতে হাত রেখে বাইয়াত করালেন। ফয়ুজাতে ভরপুর করে দিলেন ৪১তম নবী বংশধরকে। হুযূর করিম রাউফুর রহিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের নির্দেশেই এ কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। সোবহানাল্লাহ। তাঁর সঙ্গে হযরত খিজির আলায়হিস্ সালাম সহ সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ার তামাম মাশায়েখ হযরাত কেরামের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ছিল পরীক্ষিত।
সফরসঙ্গী পীর ভাইদের উপস্থিতিতে প্রিয় নবীর যিয়ারত কালে সিরিকোটি (রহমাতুল্লাহি আলায়হি) বলতে লাগলেন ডা: টি হোসেন সাহেব বহুত খোশহো আভি আভি ইনকা সাথ হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে সাথ দীদার হো রাহা হ্যায়, মুবারক হো। সোবহানাল্লাহ্! যিয়ারত শেষে হুযূর ক্বিবলার সাথী মুরীদ ও খলীফা আলহাজ্ব ওয়াজের আলী সওদাগর রহমাতুল্লাহি আলায়হি প্রিয় নবীর সাথে দীদার করানোর জন্য হুযূরকে করুন বিনয়ের সাথে অনুরোধ জানাতে থাকলেন। নাছোড় বান্দা তিনি। হুযূর ক্বিবলা বলেন, ‘ঠিক হ্যায় আপকা সাথ ভী দীদার হোগা ইনশাল্লাহ। তিনিও প্রিয় নবীর দীদার লাভ করেছেন সে সফরে। হজ্ব সমাপনান্তে হুযূর নাতিকে সাথে নিয়ে বিমান যোগে করাচির উদ্দেশ্যে এবং ভাইয়েরা চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে জাহাজযোগে পৃথকভাবে যাত্রা করেন। এই সফরে হুযূর ক্বিবলা প্রায় ৭ (সাত) মাস চট্টগ্রামে কোহিনূর লাইব্রেরীর ওপর খানকাহ্ শরীফে অবস্থান করেন। এ সময় কিছু দিনের জন্য মরহুম আলহাজ্ব আবদুল জলিল সাহেবের পাকিস্তান প্রেস পরে বাংলাদেশ প্রেস’র দোতলায় তশরীফ রেখেছিলেন।
আমরা হুযূর ক্বিবলার অসংখ্য কারামত লক্ষ্য করেছি সবচেয়ে বড় কারামত এই ‘জামেয়া।’ হুযূর ক্বিবলার সাহেবজাদা ও প্রধান খলীফা আওলাদে রাসূল (৪০তম) রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরীক্বত মুজাদ্দিদে জমান হযরতুল্ আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ রহমাতুল্লাহি আলায়হি হযরত সিরিকোটি রহমাতুল্লাহি আলায়হি’র দ্বীনি প্রতিষ্ঠান সমূহের বিকাশ, ব্যাপ্তী ও গ্রহণযোগ্যতা কল্পে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। তিনি একই মতাদর্শ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের প্রচার-প্রসারে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করে বহু মাদ্রাসা, খানকাহ্, মসজিদ স্থাপন করেছেন। শুধু তাই নয় তিনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ জশনে জুলুসে ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম) ও গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ নামে একটি যুগোপযোগী আধ্যাত্মিক সংগঠন সৃষ্টি করেন। (চলবে)
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন