দেশের প্রথম শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড সুকুকের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নিলামের মাধ্যমে সারা দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য চার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে সরকার। সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক এই বন্ড ইস্যু করছে। গতকাল নিলামে ৩৯টি আবেদন জমা পড়ে, আনুপাতিক হারে সবাই বন্ড পায়। ৪ হাজার কোটি টাকার বন্ডের জন্য আবেদন পড়ে ১৫ হাজার ১৫৩ কোটি ১০ লাখ টাকার। বন্ড পাওয়া গ্রাহকদের মধ্যে দু’জন ব্যক্তি ও বাকিগুলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, আগ্রহী ক্রেতারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা ও এর গুণিতক পরিমাণ অর্থ নিলামের জন্য দাখিল করার সুযোগ পায়। এই বন্ডের বিপরীতে বছরে ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ হারে মুনাফা দেবে সরকার। তবে মুনাফা বিতরণ করা হবে প্রতি ছয় মাস অন্তর। ইসলামি এ বন্ডের হার নির্দিষ্ট, কারণ, এটি ইজারা (ভাড়া) সুকুক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ‘সারা দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর সম্পদের বিপরীতে ছাড়া হচ্ছে এই সুকুক বন্ড। বাংলাদেশ ব্যাংক ৪ হাজার কোটি টাকা করে দুই দফায় মোট ৮ হাজার কোটি টাকার সার্টিফিকেট বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করবে। বিপরীতে তারা মুনাফা পাবে।
সুকুক ইসলামি বন্ড কীভাবে চলবে, এ নিয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বিনিয়োগকারীদের টাকায় গড়ে উঠবে এই প্রকল্প। সরকার এই প্রকল্প ভাড়া নেবে। এই ভাড়ার টাকা থেকে মুনাফা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। আর মেয়াদ শেষে পুরো প্রকল্প কিনে বিনিয়োগকারীদের মূল টাকা ফেরত দেবে সরকার। এভাবে প্রথম এ বন্ডের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
প্রচলিত বন্ড ও সুকুক বন্ডের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিই হচ্ছে বন্ড। এতে ঋণের পরিমাণ, পরিশোধের সময় ও সুদের হার উল্লেখ থাকে। প্রচলিত বন্ডে সুদ, ফাটকা ইত্যাদি থাকায় তা শরিয়াহসম্মত নয়। আর সুকুক হচ্ছে এমন একটি বিনিয়োগ সনদ, যাতে সম্পদের ওপর মালিকানা দেওয়ার নিশ্চয়তা থাকে। সাধারণত সুকুকধারীরা সম্পদের মালিকানা লাভ করেন এবং মুনাফা পান।
জানা যায়, নিলামে দেশি-বিদেশি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশে অবস্থিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আগ্রহপত্র দাখিল করে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে এ আগ্রহপত্র দাখিল করা হয়। আনুপাতিক হারে সবাই বন্ড পায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন