২০২০ সালকে করোনাবর্ষ বলা যায়। ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে আমাদের দেশে কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। এর পর দেশে করোনার আক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তবে করোনা প্রথম ধরা পড়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে চীন দেশে। চীন থেকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে পুরো বিশে^। গত ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত আমাদের দেশে ও বিশে^ করোনা রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু সংখ্যা সকলকে মর্মাহত করে। বাংলাদেশ মৃত্যুর সংখ্যা ৭৪২৮ জন, মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫০৮০৯৯ জন, সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ৪৫০৪৮৮ জন। বিশে^র করোনা রোগীর সংখ্যা ৮ কোটি ৭ লক্ষ জন বিশ^জুড়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৭ লক্ষ ৬৪ হাজার জন । তাই বিগত ২০২০ সালটি বাংলাদেশসহ সকল দেশের জন্য করোনাবর্ষ। খুবই দুঃখের বর্ষ। আজও আমরা করোনা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি নাই। করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। আমরা এখনও টিকা সংগ্রহ করতে পারি নাই। সরকার অগ্রিম বুকিং দিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ১৫ জানুয়ারি ’২১ থেকে দেশে টিকা দেয়া শুরু করতে পারবেন। নানা প্রস্তুতি সরকার নিচ্ছে।
২০২০’র প্রায় পুরোটা করোনাকাল হলেও আমাদের জীবন যাপন, আমাদের অর্থনীতি, আমাদের সমাজ ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। প্রথম দু’মাস লক ডাউন থাকার পর ধীরে ধীরে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। জনজীবনে সচলতা ফিরে আসতে শুরু করেছে। মানুষ দীর্ঘশ^াস নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে।
১. করোনাবর্ষে আমাদের সফলতা
নানা সমস্যা ও সীমাবন্ধতার মধ্যে থেকেও সরকার কোভিড-১৯ এর প্রথম ধাপ মোকাবেলা করেছে। যেখানে অনেকে ভাবছিলেন, আমাদের দেশে ১৯৭৪ সালের মতো রাস্তায় রাস্তায় মানুষ মরে পড়ে থাকবে। কিন্তু আল্লাহপাকের অনেক রহমত, প্রথম ধাপে তেমন কিছু ঘটে নাই। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে, জনগণের আন্তরিক চেষ্টায় আমরা কিছুটা হলেও সফলতার সঙ্গে করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। নানা অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, দুনীর্তির মধ্যে থেকেও মানুষ বেঁচে আছে।
সরকার দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থ স্বল্প সুদে দিয়েছে। এখনও তা চলমান। বিশেষ করে সরকারের বড় ধরনের ঋণ সহযোগিতায় তৈরি পোশাক শিল্পেখাত বেঁচে আছে। লক্ষ লক্ষ শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করতে সক্ষম হয়েছে। এখন দ্বিতীয়বারের জন্য আবারও সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সহযোগিতার পরিকল্পনা করছে।
২. কৃষিখাতে আমাদের সফলতা
দেশের কৃষিখাত আজ অনেকটা আত্মনির্ভরশীল। চাল উৎপাদনে, আমরা পৃথিবীর প্রথম কাতারে রয়েছি। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। দেশে কোনো মানুষ খাদ্যের অভাবে মৃত্যু বরণ করে নাই। যদিও করোনার ফলে দেশে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছে। করোনার পূর্বে দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল মাত্র ২২ শতাংশ মানুষ। চাল ছাড়াও আমরা মাছ, মাংস, ফলমূল ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য উৎপাদনে করোনাকালেও সফলতা, দক্ষতা দেখাতে সক্ষম হয়েছি।
৩. পদ্মাসেতু দৃশ্যমান
২০২০ সাল আমাদের সফলতার বড় মাইলফলক, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হওয়া। যেখানে পদ্মাসেতু না হওয়ার আশঙ্কা ছিল, সেখানে বিগত সালে ৪১টি স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের স্বপ্নের পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হলো। ২০০৭ সালে ২ আগস্ট প্রথম মাত্র ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা অর্থায়নে ১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সেতু এখন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। বিশ^ব্যাংক পদ্মাসেতুর ঋণ সহযোগিতা প্রত্যাহারের ফলে ব্যয় ও সময় বেড়ে যায়। নতুন অভিজ্ঞতা, নানা সমস্যা, সীমাবদ্ধতার পরও আমরা পদ্মাসেতু করতে সক্ষম হচ্ছি, এটাই আমাদের সফলতা, আমাদের অহংকার। এই অভিজ্ঞতাকে আমরা দেশের ভবিষ্যত উন্নয়নে আরও বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজে লাগাতে সক্ষম হবো।
৪. রূপকল্প ২০৪১ তৈরি
স্বপ্ন দেখতে হয়। নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য স্বপ্ন দেখা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ অনুমোদন দিয়েছে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ন: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ এইটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ২০৪১ সালকে সরকার বিশেষ বিবেচনায় নিয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নতসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘রূপকল্প ২০২১-২০৪১’। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ, যেখানে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি। জিডিপি গড় ধরা হয়েছে ৯.০২ শতাংশ হারে। ২০৩১ সালে দেশ হবে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ। প্রধানমন্ত্রী ‘প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ কে মূল্যায়ন করেছেন, এ দলিল মূলত ২০৪১ সালের মধ্যে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জনে সরকারের উন্নয়ন রূপকল্প, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যসমূহের একটি কৌশলগত বিবৃতি এবং তা বাস্তবায়নের পথ-নকশা হিসেবে। এই ‘পথ-নকশা’র পথ ধরেই ২০৪১ সালে অর্জিত হবে আমাদের ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’।
৫. আইটি খাতের উত্থান: করোনা আমাদের বিগত বছরের আইটি নির্ভর জাতিতে পরিণত হওয়ার এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। এখন আমাদের পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে অন-লাইনে। ঘরে বসে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করছি। ঘরে বসে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করছে। বাংলাদেশে বসে লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করছে। যদিও কিছু কিছু সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করোনাকালে পড়াশোনা পূর্বের মতো চলছে না। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চমানের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলসমূহে পুরোদমে ছাত্রভর্তি, ক্লাশ, পরীক্ষা এবং ফলাফল সব কিছুই সমান তালে চলছে। তবে আমাদের দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ ও সরকারি বিশ^বিদ্যালয়সমূহ আইটির পূর্ণ ব্যবহার এখনও নিশ্চিত করতে পারে নাই। তবে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। ২০২০ সালে আমাদের আইটি খাতের অগ্রগতি বেশ চমৎকার অনুপ্রেরণাদায়ক। ইতোমধ্যে আইটি পার্ক গাজীপুরসহ অন্যান্য জেলায় চালু হওয়ার পথে।
৬. কর্মসংস্থান ও বেকার সমস্যা
দেশে ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে এখনও ৪ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। এরমধ্যে চরম দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ২ কোটি ৫৬ লক্ষ। ২০২০ সালের প্রায় পুরোটাই করোনাকালে অতিবাহিত হয়েছে। তাই সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ প্রায় ছিল না বললেই চলে। সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো পর্যন্ত করোনাকালে তিন মাস প্রায় বন্ধ থাকে। পরে ধীরে ধীরে চালু হলেও পুরোদমে চলতে সময় লাগছে। অন্যদিকে তৈরি পোশাক শিল্পে রফতানি আদেশ হ্রাস পাওয়ায় বহু কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েক হাজার শ্রমিক চাকরি হারায়। নতুন কর্মসংস্থানও এইখাতে তেমন নাই।
আমাদের সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে সেবাখাতে। ২০২০ সালে সেবাখাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষুদ্র মাঝারী শিল্প প্রতিষ্ঠান এখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। ছোট ছোট ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা হারিয়েছে। হকারসহ সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর ব্যবসা এখনও চালু হয় নাই। হোটেল, পর্যটন, দোকানী, রেল, সড়ক, বিমান সকল খাতে ২০২০ সালে বেশ সমস্যার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রয়েছে। কাজেই নতুন করে কর্মসংস্থান হওয়ার কোনো পরিবেশ এখনও সৃষ্টি হয় নাই।
আমাদের সেবাখাতের আর একটি বড় উপখাত হচ্ছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ। বিগত মার্চ, ২০২০ থেকে আগামী ১৮ জানুয়ারি ২০২১ সাল পর্যন্ত সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। বেসরকারি অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও হাহাকার, চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার শিক্ষক। বেতন পাচ্ছেন না হাজার হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী। নতুন করে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হয় নাই। তাই নতুন কর্মসংস্থান হয় নাই। এই খাতে বেকার হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
আমাদের প্রত্যাশা:
১. করোনামুক্ত বাংলাদেশ: ২০২১ সালের জন্য আমাদের প্রত্যাশা অনেক। করোনামুক্ত পৃথিবী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশও করোনা মুক্ত হবে এই আশা আমরা করি। কিন্তু কীভাবে! এখনও করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার নির্দিষ্ট সময় জানতে পারি নাই। কত সংখ্যক মানুষ এই ভ্যাকসিন, কত দিনে গ্রহণ করতে পারবে তারও কোনো সুপরিকল্পনা সরকার ঘোষণা করে নাই। আবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বিশে^র সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে। নতুন রূপে করোনা আবার দেশে এসে পড়েছে। দ্রুত ছড়াবার আশঙ্কা বেশি বলে অনেকে বলছেন। বিগত প্রায় এক বছরে করোনা মোকাবেলার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যখাত দক্ষতার পরিচয় রাখুক-এ কামনা করছি। এই জন্য দক্ষ, সৎ, যোগ্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শকে সরকার দ্রুত কাজে লাগাতে হবে।
২. গণতন্ত্রকে সুসংহত করা: গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। তাই সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠানকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করতে হবে। ২০২১ সালে গণতন্ত্রকে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে সরকারকে এখন থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী, সকলকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আগামী ২৬ মার্চ ২০২১ কে তাৎপর্যপূর্ণ করার জন্য গণতন্ত্রকে সুসংহত করার বিকল্প নাই।
৩. শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল সংস্কার: করোনাকালে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রকৃত রূপ ফুটে উঠেছে। দীর্ঘ একটি বছর ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। শিক্ষাকে সকলের জন্য সহজ ও সহজ লভ্য করতে হবে। প্রতিটি শিশুকে শিক্ষার আলোতে আনতে হবে। এখনও দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ অক্ষর জ্ঞান থেকে বঞ্চিত। এই অবস্থার পরিবর্তন নতুন বছরে আমাদের কাম্য।
৪. দুর্নীতিকে না
করোনাকালে স্বাস্থ্য বিভাগসহ রাষ্ট্রের অনেক প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির মহা উৎসব দেখা গিয়েছে। তাই দুর্নীতির লাগামকে শক্ত হাতে দমন করার জন্য ২০২১ সালকে বেছে নিতে হবে। আমরা প্রত্যেকে নিজে দুর্নীতিমুক্ত থাকবো, অন্যকে দুর্নীতি করতে দেবো না, এই শ্লোগানে শপথ নিতে হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। ২০২১ সালে উক্ত ব্যবস্থাকে আরও বেশি বেগমান করতে হবে।
৫. সুশাসন ও সবার জন্য সমান আইন
‘সুশাসন ও সবার জন্য সমান আইন’ নিশ্চিত করার জন্য সরকার কাজ করছে। তাই বিচার বিভাগকে আলাদা করা হয়েছে। অনেক নতুন নতুন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মামলা বিচারকের অভাবে আটকে আছে। দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে মামলার সংখ্যা কমানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু মানুষের চাওয়া আরও বেশি। মানুষ আরও বেশি, দ্রুত, স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থা দেখতে চায়। সেই চেষ্টা ২০২১ সালে সরকার ও বিচার বিভাগ অব্যাহত রাখুক এই আমাদের প্রত্যাশা।
৬. রোহিঙ্গা সমস্যা
আমাদের বুকের ওপর পাথরের মতো চাপ দিয়ে বসে আছে প্রায় ১১ লক্ষ বার্মার অধিবাসী মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এই বিপদ উদ্ধারে চীন ও ভারত আমাদের সহযোগিতা দিতে পারে। এই দুই দেশ আমাদের বন্ধু। তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। ২০২১ সালে হোক রোহিঙ্গা সমস্যার আসল সমাধান, এই কামনা করি।
৭. আর্থিক খাতে সুশাসন
বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের ব্যাংকিং, অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজারে চলেছে নানা অনিয়ম। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ লুট হয়েছে। দেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকসমূহ থেকে বিপুল অর্থ অনিয়মের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে পাচার হয়েছে। ব্যাংকগুলোর অবস্থা করোনার ফলে আরও বেশি খারাপ পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে। সরকার ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত কোন ঋণকে খেলাপী দেখাতে বারণ করেছে। এই নিয়ম প্রত্যাহারের পর আর্থিক খাতের আসল অবস্থা বুঝা যাবে। আইনের শাসনকে এই খাতে নিশ্চিত করা জরুরি। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয় উভয়কে এই ক্ষেত্রে আরও বেশি স্বচ্ছ, সততা ও নিয়ম নীতি মানার জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
৮. একাকী জীবনের অবসান হোক
করোনা আমাদের একা করে ফেলেছে। একাকী, বন্ধ ঘরে আমরা বাস করছি। জীবনের আতংকে সকলে সামাজিক যোগাযোগ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। করোনায় মৃত্যুর পর জানাজা ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ আমাদের এখন পূর্বের মতো নেই। করোনা আমাদের আত্মকেন্দ্রিক করে ফেলেছে। ২০২১ সালে আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চাই।
লেখক: সাবেক সহ-সভাপতি এফবিসিসিআই, বিটিএমইএ, বিজিএমইএ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি, প্রতিষ্ঠতা চেয়ারম্যান ইস্টার্ন ইউনির্ভাসিটি, ইসলামিক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি:, অষ্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজ,স›দ্বীপ, চট্টগ্রাম, সাবেক সিনেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন