গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের অলি-গলি, বাসা-বাড়ি, চায়ের দোকান, গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনায়।
নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে কোমর বেঁধে নির্বাচনী মাঠে দিন-রাত সময় দিচ্ছেন। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ পৌরসভার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন। তবে এবার দলীয় ভাবে দি¦তীয় বার নির্বাচন হওয়ায় ভোটাররা মুখ খুলছেন না। মুখ খুলছেন পরিচিত দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। সরজমিনে দেখা গেছে, মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা দল বেঁধে প্রচার প্রচারনায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। তারা অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও রিক্সায় মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এমনকি স্কুল, কলেজ, মসজিদ, হাসপাতালের নিকট মাইকের প্রচার করে প্রার্থীদের যোগ্যতা ও আদর্শের কথা বলছেন। এবার এ পৌরসভায় ৫০ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান মেয়র আব্দুল্লাহ্ আল মামুন নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনীত আব্দুর রশিদ রেজা সরকার ডাবলু (লাঙ্গল), বিএনপি মনোনীত আবু খায়ের মশিউর রহমান সবুজ (ধানের শীষ), জাতীয়তাবাদী গনতান্ত্রিক আন্দোলন মনোনীত গোলাম আহসান হাবীব মাসুদ (সিংহ), স্বতন্ত্র প্রার্থী খয়বর হোসেন মওলা (নারিকেল গাছ),দেবাশীষ কুমার সাহা (মোবাইল ফোন) ও আল শাহাদৎ জামান (জগ)।
এদের মধ্যে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী খয়বর হোসেন মওলা ও দেবাশীষ কুমার সাহাও কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন ভোট যুদ্ধে। প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সব প্রার্থী। এদিকে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ১১ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২ জন প্রার্থীও মাঠে-ঘাটে কোমর বেঁধে অবিরাম প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী সময় ঘনিয়ে আসার সাথে পৌর শহরে অলি-গলি, চায়ের দোকান, হোটেল, রেস্তোরা, বিভিন্ন স্থাপনা ও বসত বাড়ির সামনে পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। প্রার্থীরা সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী খয়বর হোসেন মওলা ও দেবাশীষ কুমার সাহাও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
অন্যান্য প্রার্থীরাও বলেন জনগণের ইচ্ছাতেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তাই জনগণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে পার করবেন এ কামনা করছি। জাপার প্রার্থী আব্দুর রশিদ রেজা সরকার ডাবলু বলেন সুন্দরগঞ্জে মাটি জাতীয় পার্টির ঘাটি, তাই এ ঘাটির জনগণ আমাকে জয়ী করবে বলে বিশ্বাস। এ নির্বাচনে যেহেতু আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুই জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে তাই তাদের ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। এ সুযোগে আমার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আবু খায়ের মশিউর রহমান সবুজ বলেন ২০ দলীয় জোটের কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। তাই ২০ দলীয় জোটের ভোট পেলেই আমি নির্বাচিত হব। বৃহত্তম দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সকল প্রার্থীর প্রচারণায় পৌর সভা সরগরম হয়ে উঠেছে। হিসাব-নিকাশ চলছে ভোটারের। এ পৌর সভায় কাগজে কলমে জোটবদ্ধ না হলেও আওয়ামী লীগের শরীক দলের ভোট যাবে আ’লীগের ঘরে আর বিএনপির প্রার্থীর ঘরে ভোট যাবে জামায়াতসহ ২০ দলের। এবার দ্বিতীয়বার দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ায় ভোটাররা স্ব-স্ব দলের বা জোটের দিকে ঝুকে পড়ছেন। দিন যতই যাচ্ছে ততই ভোটারদের মত পাল্টে যাচ্ছে। মেয়রসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা আরামের ঘুম হারাম করে পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। স্ত্রী প্রার্থীদের সাথে মাঠে নেমেছেন স্বামী সন্তানরাও। তেমনি স্বামী-সন্তান প্রার্থীদের সাথেও স্ত্রী সন্তানরা বসে নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন