লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে আলেকজান্ডার বাজার খাস পুকুর কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই পুকুর ভরাট করে অবৈধ মার্কেট নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে আলেকজান্ডার বাজারের এই পুকুর নিয়ে। যেখানে পুকুর পাড়ের আগের দোকান মালিকরা ২০১৭ সাল পর্যন্ত জেলা পরিষদের জায়গা ভাড়া মেটানোর পরও দোকান ভেঙেচুরে তাদের দোকানপাট জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়। এর নেপথ্যে রয়েছে জেলা পরিষদের সদস্য আমজাদ হোসেন ও মুজাহিদুল ইসলাম দিদার। ভাঙার সময় বিশ্ব ব্যাংকের সুপেয় পানি সরবরাহের প্রকল্পের কথা বললেও বর্তমানে সেখানে টিনের ঘর তৈরি করে ভাড়া দেন জেলা পরিষদের সদস্য আমাজাদ হোসেন। এখন আবার সরকারি খাস পুকুরের উত্তর দিকে পুকুরের তলোদেশ থেকে ফাউন্ডেশন দিয়ে পাকা মার্কেটের কাজ চলছে। বিষয়টি নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পুকুরের নিচ দিয়ে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা অথবা কে বা কারা কি কাজ করছে তার সঠিক তথ্য মিলছে না কোথাও। উন্নয়ন কাজের কোন দৃশ্যমান সাইনবোর্ডও নেই। জেলা পরিষদ সদস্য আমজাদ হোসেন ও মুজাহিদুল ইসলাম দিদার কয়েকজন লাখো লোকের ব্যবহারী পুকুরটি ভরাট করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তারা মার্কেট নির্মাণ করছে। মার্কেটে দোকান বরাদ্দ দেয়ার নামে তারা কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা জানান, এখানে জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে সুপেয় পানি সরবরাহের একটি প্রকল্প রয়েছে। কিন্ত হঠাৎ তারা মার্কেট করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল করে পুকুর দখল করে মার্কেট করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তা জানান, আমাদের দফতর সেখানে কোন উন্নয়ন কাজ করছে না। কে বা কারা পুকুর ভরাট করে পাকা মার্কেট করছে আমি তেমন কিছুই জানিনা। সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখবো বিষয়টি আসলে কি?। জেলা পরিষদের সকল উন্নয়ন কাজগুলো বিতর্কিত।
স¤প্রতি জেলা পরিষদের অর্থায়নে আলেকজান্ডার মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুটি টয়লেট নির্মাণে করা হয়েছে পুকুর চুরি। টয়লেটগুলো নির্মাণ করা হয়েছে আরেকটি টয়লেটের সেফটি ট্যাঙ্কির উপর। টয়লেটের ভিতর এত কম জায়গা যে একজন প্রাথমিকের ছোট শিশু টয়লেটটি ব্যবহার করতে কষ্ট হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা পরিষদের সদস্য আমজাদ হোসেন ও মুজাহিদুল ইসলাম দিদার বলেন, আমরা একসনা বন্দোবস্ত নিয়ে মার্কেট করছি। লেখালেখি না করতে তারা সাংবাদিকদের বিশেষ অনুরোধ জানান।
পুকুর দখল করে অবৈধ মার্কেট নির্মাণ বিষয়ে পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন মেজু বলেন, এগুলো জেলা পরিষদের ব্যাপার। তারা ভাল বলতে পারবে। রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল মোমিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না, আমি এখনই ঘটনাস্থলে লোক পাঠাচ্ছি। লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী কুল প্রদীপ চাকমা খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, জেলা পরিষদের উন্নয়নের স্বার্থে ওইখানে মার্কেট করা হয়েছে। তবে কোন প্রকার অনিয়ম বা মানুষের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা যাবেনা বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন