রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ম্লান বিএমপির মর্যাদা

গোয়েন্দা পুলিশের কর্র্মকান্ড

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৬ এএম

বরিশাল মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের এসআই মহিউদ্দিনের হাতে গ্রেফতারের পরে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউলের মৃত্যুর পরে পুলিশের ইমেজ আরো তলানিতে ঠেকেছে। যদিও পুলিশের দায়িত্বশীল মহল থেকে দাবি করা হয়েছে একজনের কর্মকান্ডে পুরো ইউনিটের ওপর প্রভাব পড়বে না। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি নগরীর ট্রাফিক পুলিশের নানা অপকর্ম এ নগরীতে অনেকটাই ওপেন সিক্রেট।
বছর দু’য়েক আগেও গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্য একটি বেসরকারি টিভি চানেলের সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনায় কয়েকজনকে সাসপেন্ড করা ছাড়াও ডিসি ডিবি’র অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ট্রাফিকের ডিসি’কে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে ঘটনা খুব বেশিদিন মনে রাখেনি বিএমপি’র গোয়েন্দা শাখাসহ ঐ ইউনিটের দায়িত্বশীল মহল। গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে নগরীর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সড়ক থেকে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউলকে আটক করে অমানবিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। আর সুস্থ রেজাউলকে আটকের পরে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর ঘটনা পুলিশ দায় এড়াতে পারে না বলে মনে করছেন নগরবাসী। এমনকি ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে নিহত রেজাউলের শরীরে একাধিক আঘাতের আলামত পাওয়া গেছে। মহানগর পুলিশ থেকে ইতোমধ্যে অভিযুক্ত এসআই মহিউদ্দিনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হলেও কঠোর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
তবে নিহত রেজাউলের পিতার দায়ের করা হত্যা মামলা আদালত আমলে নিয়ে তদন্তে পিবিআই’কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এসআই মহিউদ্দিনসহ অজ্ঞাত আরো ৩ জনকে আসামি করে দায়ের করা ঐ মামলায় আদালত একজন ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করারও নির্দেশনা প্রদান করেছে।
এদিকে এ ঘটনার পরে এসআই মহিউদ্দিনের নানা অপকর্ম প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। বরিশালেরই বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা এক সাবেক পুলিশ কর্মীর পুত্র মহিউদ্দিন কনেস্টবল হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেয়। এরপরে নানা পথ ধরে সে সাব-ইন্সপেক্টর পদোন্নতি পেয়ে বরিশাল মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় নিয়োগ লাভের পরে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এমনকি ইতোপূর্বে কোতয়ালী থানায় চাকরিকালেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল।
বিভিন্ন নিরিহ মানুষকে ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টারে হত্যাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে সে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নগরীর রূপাতলী ও সাগরদী এলাকায় জমিজমা বেচা-কেনায় পর্যন্ত তার হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু, এসব বিষয় কি কারণে এতদিন বিএমপি’র গোয়োন্দা শাখার প্রধানসহ বিএমপি’র উর্ধ্বতন মহলের অগোচরে ছিল, সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নগরবাসীর মধ্যে।
এ সব প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার বিএমপি’র কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) জানান, এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। কোন একজন বা একাধিক সদস্যর নৈতিকতাহীন কর্মকেন্ডে পুরো ইউনিটের মর্যাদা ম্লান হতে দেয়া হবে না। পুরো বিষয়টি তদন্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আদালতে দায়েরকৃত মামলা পিবিআই তদন্ত করছে। সেখানে যা পাওয়া যাবে, সেভাবেই পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও জানান এ পুলিশ কমিশনার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন