ঢাকায় গেল রাতের তাপমাত্রা ১৮.৮, সৈকত শহর কক্সবাজারে ১৯, চট্টগ্রাম-মংলায় ১৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার দিনের বেলায় পারদ ছিল ২৭.৬, কক্সবাজারে ৩১.৭ (দেশের সর্বোচ্চ), চট্টগ্রামে ২৯, মংলায় ২৮.৮ ডিগ্রি সে.। সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল নওগাঁর বদলগাছীতে ১১.৬ ডিগ্রি সে.। ভিন্ন ভিন্ন এই কয়েকটি জায়গার পারদই বলে দিচ্ছে পৌষ মাস প্রায় ফুরিয়ে এলেও দেশে এবার ‘স্বাভাবিক’ শীতের দেখা নেই।
আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। অর্থাৎ পৌষেই দিনভর উজ্জ্বল সূর্য কিরণকালের সুবাদে রোদের তেজ বা ‘উম’ আরো দু’য়েক দিন বজায় থাকারই সম্ভাবনা। ‘মাঘের শীতে বাঘ পালাবে’ কিনা তা সময়ই বলে দেবে।
দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তরের কনকনে হাওয়ার জোর বাড়তে পারে সামনের সপ্তাহ থেকে। ক্রমেই এক থেকে দু’টি মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে দেশের অনেক অঞ্চলে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রাত থেকে ভোর ও সকালের পারদ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি এবং তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময়ে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের উত্তর, পশ্চিম, উত্তর-পূর্ব, মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
বাস্তবে আবহাওয়া-জলবায়ুর এলোমেলো, খেয়ালী আচরণ দিয়েই খ্রীস্টিয় নতুন বছর ২০২১ শুরু হয়েছে। ঘোর শীত ঋতুর পৌষ মাসজুড়ে শীত ও কুয়াশা ‘আছে-নেই’ অবস্থা। ২ পৌষে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে ৪ থেকে ৫ দিন পর ক্রমেই উধাও। দিনের তাপমাত্রা ৩০, রাতের পারদ ১৫ থেকে ১৮ ডিগ্রি অতিক্রম করেছে অনেক জেলায়। গতকালও দেশের কোথাও ছিলনা শৈত্যপ্রবাহ। ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামলে শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য হয়।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগর গেল বছরজুড়েই তপ্ত ছিল। এখনও সমুদ্রের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে রয়েছে। এ অবস্থায় বঙ্গোপসাগর থেকে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমা উষ্ণ বায়ুমালা ও বিক্ষিপ্ত হালকা মেঘের ভেলা বাংলাদেশ ও সংলগ্ন ভারত, নেপালের দিকে ভেসে আসছে। এরফলে হিমেল বায়ু প্রবাহ অর্থাৎ উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকের হিমালয় ও সাইবেরীয় বায়ুমালার আগমন অনেকটা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
বর্তমানে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঢাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার। তবে বিপরীত দক্ষিণ দিক বঙ্গোপসাগরের বায়ুমালার কারণে উত্তুরের শীতল বায়ু জোরালো নয় এখনও। তাছাড়া বাতাসে জলীয়বাষ্পের হারও মাত্রাতিরিক্ত। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বা জলীয়বাষ্পের হার ছিল ৬০ শতাংশ, সকালে ছিল তা ৯০ শতাংশ। তবে চলতি সপ্তাহের শেষে, আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে এ অবস্থা বদলে যেতে পারে। তখন বাড়তে পারে উত্তুরের হিমেল হাওয়া, শীত-কুয়াশার তীব্রতা।
পৌষের শেষ দিকেও দিনমান রোদের কড়া তেজে ‘শীতকাল’ যেন আপাতত উধাও। শীতের গরম মোটা কাপড় ব্যবহার করতে হচ্ছে না তেমন।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন