মিয়ানমারে অসহযোগ আন্দোলনের সমাপ্তি টেনে সরকারি চাকরিজীবীদের কাজে ফেরার ডাক দিয়েছেন সামরিক জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইং। করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখতে মানুষজনকে জমায়েত থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারির পর এ আহ্বান জানান তিনি। তবে জান্তা প্রধানের এ আহ্বানে সাড়া না দিয়ে আজ শুক্রবার সকাল থেকেই আবারও মহাসড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন অং সান সুচির সমর্থকসহ দেশটির জনসাধারণ। এ সময় সু চির সমর্থকরা জান্তা সরকারের ওপর আরও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতভর চিকিৎসকসহ অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। অন্যদিকে শুক্রবার সকালে ২৩ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে দেশটির সেনা সরকার। তাদের বক্তব্য, একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা, শান্তি ও উন্নয়ন ফিরিয়ে আনতেই তাদের এ পদক্ষেপ।
এদিকে মিয়ানমারে বিভেদ ভুলে একজোট হচ্ছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী। বিভেদ দূরে সরিয়ে রেখে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে একজোট হচ্ছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের মানুষ। বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম, হিন্দু এবং জাতিগত আরও নানা গোষ্ঠীর মানুষ চলমান বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছে।
মিয়ানমারের বিশাল অংশজুড়ে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা বিদ্রোহী যোদ্ধাদের প্রধান সশস্ত্র সংগঠনগুলোও অসহযোগ আন্দোলনে সমর্থন দিচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক নেতাদের দমনপীড়ন তারা সহ্য করবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে।
মিয়ানমার-ভারত সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলের আদিবাসী নাগা জাতিগোষ্ঠীর এক যুবনেতা বলেছেন, “এখন যা ঘটছে তা দলীয় রাজনীতি নিয়ে নয়।” ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল নাগা পার্টি একটি বিবৃতি দিয়ে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে।
নাগা যুব নেতা ফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, “এ লড়াই সিস্টেমের বিরুদ্ধে। আমরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে আপোস করতে পারি না। এই বাহিনী আমাদের ইতিহাসে এক কালো চিহ্ন এঁকে দেবে।”
কারেন গোষ্ঠীর এক নেতা এবং সালুইন ইন্সটিটিউট থিংক-ট্যাংকের কর্ণধারের কথায়, “অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করাটা অনেকেই তাদের দায়িত্ব হিসাবে দেখছে। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর হাজার হাজার যুবক আজ দেশব্যাপী বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। তাদের সবার লক্ষ্য একটাই, সামরিক স্বৈরাচারকে প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।” সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন