শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কাদের মির্জা-বাদল গ্রুপের সংঘর্ষ

কোম্পানীগঞ্জে গুলিবিদ্ধসহ আহত অর্ধশত

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৪ এএম

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে আওয়ামী লীগের কাদের মির্জা ও বাদল গ্রæপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষে এক সংবাদকর্মীসহ উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে।
গতকাল বিকাল পৌনে ৫টার দিকে চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলো- চরফকিরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, রুহুল আমিন, মেহরাব, বাপ্পী, কামাল পাটোয়ারী, শাওন, শামীম, দেলোয়ার হোসেন, মাস্টার, নসু, কামরুল হাসান, নুরুল অমিত, মাসুদ, কাঞ্চন, রায়হান, দেলোয়ার, বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির’সহ ৫০ জন। এদের মধ্যে সংবাদকর্মী বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির, নুরুল অমিত, ফরহাদ ও কাঞ্চন গুলিবিদ্ধ হয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বিকাল সাড়ে ৪টায় তার সমর্থকদের চাপরাশিরহাট দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলেন। কিন্তু তার আগে চরফকিরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটনের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা ওই কার্যালয়ে এসে উপস্থিত হয়। নির্ধারিত সময়ে বাদলের সমর্থকরা দলীয় কার্যালয়ে আসলে লিটনের সমর্থকদের সাথে বাকবির্তকের ঘটনা ঘটে। এর একপর্যায়ে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বার্তা বাজার এর প্রতিনিধি বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির।
এদিকে, সংঘর্ষের পর নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে নিজের দলের নেতাকর্মীদের ওপর চাপরাশিরহাট বাজারে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এতে অন্তত তার ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তার কোন নেতাকর্মী মারা গেলে তার দায়-দায়িত্ব সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, নিজাম হাজারী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে নিতে হবে বলে জানান কাদের মির্জা। পুলিশের সহযোগিতায় তার নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করা হয়েছে বলেও দাবি করেন মির্জা। কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল হক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১০-১২ রাউন্ড টিয়াসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এর আগে আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। সংবাদ সম্মেলনে মির্জার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। দুপুরে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ দলের অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন জেহান, সদর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান নাছের, নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, জেলা যুবলীগ আহবায়ক ইমন ভট্ট, যুগ্ম আহবায়ক একরামুল হক বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আসাদুজ্জামান আরমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আবদুল কাদের মির্জা দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপরাজনীতির অভিযোগ করে আর নিজেই অপরাজনীতিসহ নানা অনিয়মন করে বেড়াচ্ছে। তিনি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলীয় প্রধান তথা সরকার প্রধান শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জেলা সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অশোভন আচরণ করে যাচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াতের মতো রাষ্ট্রযন্ত্রের তথা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ করে যাচ্ছেন। আর তার এসব কর্মকান্ড দলীয় শৃঙ্খলা ও রাষ্ট্র বিরোধী। এমতবস্থায় নেতাকর্মীরা আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
অপরদিকে, আজ সকাল ১০টা থেকে তার সমর্থকদের লাঠিসোটা নিয়ে পুনরায় থানার সামনে অবস্থান নেয়ার নির্দেশও দেন কাদের মির্জা। এসময় তিনি বলেন, তার দাবি না মানা পর্যন্ত এ অবস্থান ধর্মঘটন চলবে।
প্রসঙ্গত, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও পরিদর্শককে প্রত্যাহার এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের দাবিতে থানার সামনে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন আবদুল কাদের মির্জা। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ অবস্থান ধর্মঘট চলে।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন