আগামী এক মাসের মধ্যে চালের বাজার স্বাভাবিক হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি এমপি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম না কমা পর্যন্ত দেশেও তেলের দাম কমবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে রংপুর জেলা পরিষদ চত্বরে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চালের যে সমস্যা চলছে তা থাকবে না। এটা সহনীয় হবে। আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে বোরো ধান উঠে যাবে। এরমধ্যে আমরা ১০ লক্ষ টন খাদ্য আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টন খাদ্য এসেছে। আশা করছি এক মাসের মধ্যে চালের বাজার স্বাভাবিক হবে।
তেলের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ছয় মাস আগে তেলের দাম ৭০০ ডলার ছিল। এখন তা বেড়ে সাড়ে ১১'শ ডলারে পৌঁছেছে। যার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারসহ বাংলাদেশেও তেলের দাম বেড়েছে। এটা যদি না কমে তাহলে আমাদের দেশেও কমানো যাবে না। আমরা নব্বই ভাগ তেল বাইরে থেকে আমদানি করি। তাই আমরা চাইছি টিসিবির মাধ্যমে কম দামে তেল দিতে।
আসন্ন রমজানে মাসে খাদ্য পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণসহ দ্বিগুণ খাদ্য আমদানির জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে টিসিবি বিশাল পরিমাণ খাদ্য পণ্য আমদানির চিন্তা করছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই সাধারণ মানুষের কষ্ট না হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি, ভর্তুকি দিয়ে হলেও মানুষের হাতে টিসিবির মাধ্যমে নিত্যপণ্য পৌঁছে দিতে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রমজানে দ্বিগুণ পণ্য আমদানি করার ব্যবস্থা নিয়েছি।
টিসিবির পঁচা পেঁয়াজ বিক্রি এবং ১০ কেজি পেঁয়াজ না কিনলে অন্য পণ্য বিক্রি না করার ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তখন পেঁয়াজ আমাদের স্টকে ছিল। আমরা ৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনে তা টিসিবির মাধ্যমে ১৫ টাকা দরে ক্রেতাদের দিচ্ছি। যার কারণে টিসিবি হয়তো মনে করেছে, মানুষ যদি পেঁয়াজটা না নেয় এটা নষ্ট হবে। আর এই নষ্টটা কিন্তু আমার-আপনারসহ দেশের মানুষের টাকা। ভর্তুকি দেয়া মানে কিন্তু জনগণের টাকা। সেই বিবেচনায় হয়তো বলেছে আপনারা পেঁয়াজটা নেন। যাতে করে পঁচে না যায়। পনের টাকায় পেঁয়াজ দেয়া কিন্তু বাজারের তুলনায় অনেক সস্তা। তবে এখন পেঁয়াজের স্টক কমে এসেছে। আগের সেই সমস্যাটি আর নেই।
সরকারের আমলে রংপুরের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে টিপু মুনসি বলেন, শিল্প-কলকারখানা করার জন্য রংপুরে গ্যাস আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময় রংপুর তথা উত্তরবঙ্গকে বিবেচনায় রেখে উন্নয়ন করার কথ বলেন। সরকার ভীষণ চেষ্টা করছে রংপুর অঞ্চলে প্রচুর আন্তর্জাতিক ইনভেস্টমেন্ট আনতে। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বেশ কিছু শিল্প-কলকারখানা রংপুরে আনা সম্ভব হবে। যাতে করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিয়েও আমরা এই অঞ্চলে শিল্পায়ন গড়ে তুলতে চেষ্টা করছি। তবে রংপুরের মানুষকে কাজ করার জন্য বাইরেও যেতে হবে। হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না। আমরা যতবেশি বাইরে যাব, ততবেশি সুবিধা হবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশেও যেতে হবে।’
এরআগে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট ছাফিয়া খানম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, উপদেষ্টা মোজ্জামেল হক, জেলা পরিষদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন