বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবায় নবীনবরণ

প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

প্রায় ১৩৭ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী, কানাডার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ওয়েস্টার্ন কানাডার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় “ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা”। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সুনিপুণ স্থাপত্যশৈলী, নয়নাভিরাম ক্যাম্পাস প্রথম দর্শন এই মন কেরে নেয় যে কারও। ম্যানিটোবা প্রভিন্সের প্রধান শহর উইনিপেগের এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ¯œাতক ও ¯œাতকোত্তর কোর্স মিলিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০০০০ শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরার মধ্যে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের শিক্ষার্থী নেহায়েত কম নয়। বিজ্ঞান, ব্যবসা শিক্ষা, চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিটি ক্ষেত্রেই সময় উপযোগী গবেষণার মাধ্যমে দেশের নাম প্রতিনিয়ত উজ্জ্বল করছে বাংলাদেশের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী। পরিবার, পরিজন সবাইকে ছেড়ে প্রায় ১১০০০ কিমি দূরে থাকলেও নিজস্ব সংস্কৃতি দেশের প্রতি ভালবাসা যেন ভুলতে পারেনি কেউ। বিজয় দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস, পহেলা বৈশাখ প্রতিটি প্রোগ্রাম সগৌরবে পালন করছে ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা বাংলাদেশী স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ জানুয়ারি, শুক্রবার নতুনদের শুভেচ্ছা ও পুরনোদের বিদায় জানাতে হয়ে গেল বছরের সেরা আয়োজন নবীনবরণ এবং বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
সেদিন তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ২০, প্রচ- ঠা-ার মধ্যেও ইউনিভার্সিটি সেন্টার এড় মাল্টিপারপাস রুম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা ৭.৩০টায়, বাঙালিসহ অন্যান্য দেশের প্রায় ৩৫০ জন নাগরিকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে যোগ হয় এক ভিন্ন মাত্রা, মুহূর্তেই পরিণত হয় অন্যরকম মিলন মেলায়। দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগের অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক এবং কানাডা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি রহীদুল ম-ল। তারা শিক্ষার্থীদের মেধার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে দেশপ্রেম বুকে ধারণ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রেখে দেশের সুনাম অক্ষুণœ রাখার আহ্বান জানান এবং সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। নতুন শিক্ষার্থী এবং সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীদের হাত গিফট বক্স তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথি বৃন্দা সারাহ-আরিফ এবং সায়েমা-রিফাতের অসাধারণ বাচনভঙ্গি এবং পালাক্রমে ব্যতিক্রমী উপস্থাপনা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। একের পর এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় জমে উঠে সাংস্কতিক সন্ধ্যা। বাংলা সিনেমার ’৯০-এর দশক থেকে শুরু সমসাময়িক গান (মেডলী) নিয়ে মঞ্চ কাঁপাতে আসেন শাতিল, আহমেদ, রোমান, সারাহ এবং অন্তরা। এরপর ওয়ালীউল্লাহর নির্দেশনায় রোমান্টিক কমেডি ঘরনার নাটক “কেমনে কি” পরিবেশিত হয়। মুখ্য চরিত্রে ছিলেন সোমাইয়া, শাতিল, ওয়ালী, জয় ও সাবিতা।
সুনীলের বিখ্যাত কবিতা “কেউ কথা রাখেনি” আবৃতি করেন আরিফা। এরপর দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ ২১ ফেব্রুয়ারি উৎযাপন সম্পর্কিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখান হয়। প্রধান চরিত্রে ছিলেন আরমান এবং ফয়সাল শিবলী। দেখতে দেখতে অনেক সময় গড়ালে রাত ১০টার দিকে দেয়া হয় খাবার বিরতি এবং পরিবেশন করা হয় দেশীয় বিভিন্ন মুখরোচক খাবার। বিরতির পর আবারও শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ফ্যাশনশো। বাংলাদেশের ষড়ঋতুর আদলে পোশাক পরিধান করে মনমাতান পরিবেশনা নিয়ে আসে দিগন্ত-সোমাইয়া, জায়েব-নুসরাত, আরমান-সায়েমা, ইমতিয়াজ-শতাব্দী, গাজী-আফসানা এবং সাবিক-ইশরাত জুটি। এরপর পরিবেশিত হয় নদীর মঞ্চ কাঁপানো নাচ। সবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন প্রথম ক্লাসের সাথে নানান স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। তেমনি একটি ভিডিও চিত্র দেখান হয় নবাগত ছাত্র মীরের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করে। সকল ভিডিও ধারণ এবং এডিটিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন ইফতেখার।
অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে সোলো গান পরিবেশন করে সবাইকে মাতিয়ে তুলেন পরিচিত মুখ শাতিল। পুরো অনুষ্ঠানের সঙ্গীত আয়জনে ছিলেন ছোটন এবং রোমান (গিটার), সাদ (ড্রাম), সাবিত (কিবার্ড)। বাংলাদেশী স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাকিব রহমান সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
ষ আরিফুল ইসলাম, কানাডা থেকে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন