চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক ও শ্রমিকদের উদ্যোগে বিশাল মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ,বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়েছে। (৩রা মার্চ) বুধবার চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কের রাউজান সদর মুন্সিরঘাটা থেকে জলিল নগর বাসস্টেশান পর্যন্ত দেড়ঘন্টা ব্যাপি দীর্ঘ দু কিলোমিটার জুড়ে মানববন্ধন, ২০ মিনিট সড়ক অবরোধ, মুন্সিরঘাটা থেকে রাস বিহারি ধাম গেট পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন ৫১টি ব্রিক ফিল্ডের কয়েকশ মালিক ও কয়েক হাজার শ্রমিক। এই মানব বন্ধনের নেতৃত্ত দেন অনুষ্টানের সমন্বয়ক সংগঠক সুমন দে।এসময় শ্রমিকরা সংবাদ মাধ্যমকে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা আজ সংসারের ভরন পোষণ নিয়ে চিন্তিত।কিভাবে আমরা নিজে খাব, পিতা-মাতা, ছেলে, সন্তানকে খাওয়াব, সংসার চালাবো,ভবিষ্যত কি হবে তা খুঁজে পাচ্ছিনা।
মালিক সমিতির কর্মকর্তা আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আনোয়ারুল ইসলাম, জানে আলম জনি, ডাক্তার সুজিত দত্ত, আজিজুল হক কোম্পানী, ইউনুচ কোম্পানী, সৈয়দ হোসেন কোম্পানী, এস এম শহিদুল্লাহ রনি, মুহাম্মদ সোহেল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন ইট ভাটায় দৈনিক ও মাসিক মজুরিতে, ড্রাইভার ও হেলপার শ্রমিক, রং মিস্ত্রি শ্রমিকসহ আরো বিবিধখাতে কাজ করছে ১লাখারও বেশি লোক। চট্টগ্রামে সর্বমোট ২৮০টিরও বেশি ইটভাটা রয়েছে যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনে পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’মুঠো আহার তুলে দিচ্ছে প্রায় দুইলক্ষ আশি হাজারেরও বেশি শ্রমিক। সেই সাথে এই দুই লক্ষ আশি হাজার শ্রমিক পরিবারের কয়েকলক্ষ মানুষের আহার জুটে। এখন গুঁড়িয়ে দেওয়া ইটভাটার সেই শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের ভবিষ্যত অন্ধকারচ্ছন্নতায় দিনাতিপাত করছে, এরই মধ্যে পরিবারের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছু পরিবার আত্মহত্যার মতো পথ খুঁজে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
বক্তারা আরো বলেন, একটি ইটভাটা চালু করতে প্রতিবছর দেড় কোটি টাকা একটি বড় অংকের টাকা শ্রমিকদের অগ্রীম পরিশোধ করতে হয়। এজন্য নিতে হয় ব্যাংক থেকে ঝণ। তাছাড়া চট্টগ্রামের ২৮০টি ব্রিক ফিল্ড প্রতিবছর ১২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার ভ্যাট দিয়ে থাকে। তাছাড়া ভূমি, ট্রেড লাইসেন্স, আয় কর, স্থানীয় করসহ বিভিন্ন কিছু প্রদান করে আঞ্চলিক অর্থনীতিতে অবদান রাখছে এইসব ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রি। কিন্ত অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, পুরো বাংলাদেশে ইটভাটা চালু থাকলেও শুধু চট্টগ্রামের ইট ভাটাগুলো অভিযান করে বন্ধ করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক। আমরা মনে করি, চট্টগ্রাম উন্নয়নের ব্যাঘাত করার জন্য আন্তজার্তিক ষড়যন্ত্র হিসেবে শুধুমাত্র চট্টগ্রামের ব্রিক ফিল্ডগুলো বন্ধের জন্য আদালতে ওই রীট করা হয়েছে। বক্তারা মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ব্রিক ফিল্ড রক্ষার দাবী জানান। পরে শ্রমিক ও মালিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগকে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন