দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে চলমান লকডাউন প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন খনিতে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকরা। গতকাল রোববার সকাল থেকে তারা কর্মবিরতি করে খনির ভিতরে-বাহিরে বিক্ষোভ মিছিল ও খনির প্রধান কার্যালয় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে চলমান লকডাউন প্রত্যাহার করে খনিতে নিয়োজিত সকল শ্রমিকদের করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগকরে স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদান করাতে হবে এবং খনির প্রধান গেট উম্মুক্ত করতে হবে। সকল শ্রমিকদের প্রফিট বোনাসসহ বকেয়া বেতন ভাতা ও উৎসব বোনাস প্রদান করতে হবে। সে সাথে শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তাদের এই ঘোষিত তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য তারা আন্দোলন শুরু করেছে। শ্রমিক নেতা নুর ইসলাম বলেন, লকডাউনেরর অজুহাতে কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ শ্রমিকদের দীর্ঘদিন বসিয়ে রাখছে এখন শ্রমিকদের বাড়ীতে খাবার নাই। তিনি বলেন, অবিলম্বে লকডাউন প্রত্যাহার করে শ্রমিকদের কাজে লাগাতে হবে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকসহ খনি কর্তৃপক্ষ খনির অভ্যন্তরে বসলেও আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসেরর কারণে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ সারাদেশের সাথে বড়পুকুরিয়া খনি শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিটিতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপর ওই বছরের আগস্ট মাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল সরকারি আধা সরকারী অফিস আদালত খুলে দেয়া হলেও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়নি। এতে করে খনির অভ্যন্তরে আটকা পড়ে খনিতে কর্মরত ৫০০ শ্রমিক ও সাড়ে ৩৫০ কর্মকর্তা-কমর্চারী। এরমধ্যে খনির বড় বড় কর্মকর্তাগণ বাহিরে বের হওয়ার সুযোগ পেলেও সেই সুযোগ পায়নি খনির নিম্নস্তরের কর্মকর্তা-কমর্চারীগণ। ফলে দীর্ঘ এক বছর থেকে তারা পরিবার পরিজন ছাড়া খনির অভ্যন্তরে একাকিত্ব জীবন যাপন করছে। অপরদিকে যারা পরিবার নিয়ে খনির আবাসিক ভবনে রয়েছেন তাদের ছেলে মেয়েও বাহিরে বের হতে পারেনি। তারাও এক প্রকার বন্দী জিবন যাপন করছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে খনির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে খনির ঠিকাদারী চীনা কোম্পানী এক্সএমসি ও সিএমসির আপত্তির কারণে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন