মাদারীপুরের শিবচরে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ফুসলিয়ে তুলে নিয়ে রাতভর ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে জাকির হাওলাদার (২৫) নামের এক দোকান কর্মচারীর বিরুদ্ধে। ধর্ষণ শেষে ওই কিশোরীকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় জাকির। স্থানীয়দের সহযোগিতায় কিশোরী বাড়ি ফিরে আসলে তার পরিবার মামলা দায়েরের পর পুলিশ ধর্ষক জাকিরের সহযোগি ভাড়াটিয়া দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বুধবার পর্যন্ত ধরা পড়েনি ধর্ষক জাকির।
মামলার নথি ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের বাসিন্দা দরিদ্র দিনমজুর নিজের ঘর না থাকায় স্ত্রী ও ১ মেয়েসহ প্রায় ১০ বছর আগে একই উপজেলার পাঁচ্চর ইউনিয়নের এক পরিবারে আশ্রয় নেয়। পরিবারটি তাদের অসহায়ত্ব দেখে নিজেদের একটি ঘরে ভাড়া ছাড়াই বসবাস করতে দেয়। ওই দরিদ্র দিনমজুর মাছবাজারে কাজ করে বধির স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কোনোমতে সংসার পরিচালনা করছিলেন। কয়েক বছর আগে দেলোয়ার বেপারি (৩৫) ও তার স্ত্রী জান্নাত (২৭) ওই কিশোরীদের পাশের ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। দেলোয়ার ভাজা খাবার তৈরি করে এলাকার বিভিন্ন হাটে বিক্রি করত। প্রায় এক বছর ধরে একই উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের সাড়ে এগারোরশি লপ্তিকান্দি গ্রামের মৃত আনোয়ার হাওলাদারের ছেলে জাকির হাওলাদার দেলোয়ারের কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত হয়। এরপর জাকির প্রায়ই ওই কিশোরীকে কুপ্রস্তাব দিত।
গত ২ মার্চ দেলোয়ার ও তার স্ত্রী জান্নাতের সহযোগিতায় জাকির জোরপূর্বক কিশোরীর মুখ ও হাত বেঁধে অটোরিকশায় করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রামের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই বাসায় আটকে রেখে কিশোরীকে জাকির রাতভর ধর্ষণ করে।
পরদিন ৩ মার্চ দুপুরে কিশোরীকে অসুস্থ অবস্থায় জাকির শিবচরের পাঁচ্চর এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা মেয়েটিকে উদ্ধার করে এক বাসায় রাখে। ৪ মার্চ স্থানীয়রা মেয়েটিকে বাহাদুরপুরের বাসায় পৌঁছে দেয়। মেয়ের কাছে ধর্ষণের ঘটনা শুনে ৪ মার্চ মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে জাকির, দেলোয়ার ও জান্নাতকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা করেন।
ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার ও তার স্ত্রী জান্নাতকে গ্রেফতার করে।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী জানান, দেলোয়ার আর জান্নাত জাকিরের কুপ্রস্তাবে রাজি হতে আমাকে অনেক চাপ দিতো। জাকিরের সঙ্গে দেখা করতে রাস্তায় না গেলে আমার বাবা, মা ও আমাকে মেরে ফেলবে বলে ভয় দেখিয়ে আমাকে হাত ও মুখ বেঁধে এক বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে রাতভর জাকির আমাকে ধর্ষণ করে পরদিন রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। কিশোরীর বাবা জানান, আমি অসহায় মানুষ। আমার মেয়ের জীবন যারা নষ্ট করেছে আমি এর কঠিন বিচার চাই।
শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন জানান, ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার পর ধর্ষণকারীর সহযোগি দেলোয়ার ও তার স্ত্রী জান্নাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাকিরকে গ্রেফতারের অভিযান চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন