শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মার্চের শেষে উদ্বোধন

পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র

মো. জাকির হোসেন, পটুয়াখালী থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০৩ এএম

চলতি মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহেই পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত ১৩২০ মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় নির্মিত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরুর চার বছরের মধ্যেই গত বছরের ১৫ মে জাতীয় গ্রিডে প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করে আসছে।

ইপিসি কনট্রাক্টরের সাথে পারফরমেন্স গ্যারান্টি টেস্ট সম্পন্ন করে গত বছরের ডিসেম্বরে এক মাসের রিলাইবেলিটি রান টেস্ট ছাড়াও পিডিবির সাথে ক্যাপাসিটি টেস্টের সব ধরনের পরীক্ষা সফলতার মাধ্যমেই পিডিবি কর্তৃক বাণিজ্যিক উৎপাদানের তারিখ গত বছরের ৮ ডিসেম্বরে ঘোষণা করা হয়। পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (বিসিপিসিএল) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. পিঞ্জুর রহমান জানান, গত বছর কোভিড-১৯ এর কারণে নির্মাণ কাজ কিছুটা বাধাগ্রস্থ হলেও প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মওলার দিক নির্দেশনায় তাপ বিদ্যুতের সকল নির্মাণ, কমিশনিং এবং পারফরমেন্স টেস্ট কার্যক্রম শেষ করে বাণিজ্যিকভাবে গত বছর ডিসেম্বর থেকে প্রথম ফেজের আওতাধীন দুই ইউনিট থেকেই জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ বলেন, দ্বিতীয় ইউনিট থেকে গত বছরের ২৬ আগস্ট পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন কার্যক্রম শুরুর ১০ দিনের মধ্যেই গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ চুক্তি অনুযায়ী পূর্ণ ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এদিকে গত বছরে আবহাওয়া খারাপ থাকায় বিদ্যুতের ডিমান্ড না থাকায় ফুল লোড টেস্ট কিছুটা ব্যাহত হয়। তবে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিটই আলাদাভাবে তাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে ইতোমধ্যে সরবরাহ করেছে। দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদিত বিদ্যুৎ পিডিবির সাথে সফল ক্যাপাসিটি টেস্টের সিওডি ঘোষণার পরে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতের এক অভাবনীয় সাফল্যের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাবে পায়রা ১৩২০ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের জন্য পায়রা থেকে পটুয়াখালী সদর হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপুর উপজেলা পর্যন্ত আগেই ১৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবল সার্কিটের হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন টানা হয়েছে। এর মাধ্যমে বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রয়েছে। এছাড়াও গোপালগঞ্জ গ্রিড থেকে ঢাকার আমিন বাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ওই লাইন নির্মাণ সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে পদ্মা রিভার ক্রসিং লাইন। তবে এটির সমাধান করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে বলে পিজিসিবি বরাত দিয়ে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানান।

পরিচ্ছন্ন কয়লা প্রযুক্তিসম্পন্ন পরিবেশবান্ধব (আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজির মাধ্যমে) দেশের বৃহত্তম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পায়রা। বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি এবং চায়না সিএমসির ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ এবং চীনের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। এক হাজার একর জমির উপর নির্মিত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনের জন্য দৈনিক ১৩ হাজার টন কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এ কয়লা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সরাসরি আমদানি করে কেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে খালাস করা হচ্ছে।

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয়। পরে গঠিত হয় বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। যৌথ উদ্যোগের ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পায়রার এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছেন চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এনইপিসি ও সিইসিসি কনসোর্টিয়াম। চীনের এক্সিম ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ জন্য এক হাজার ২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০ পরিবারকে ১৬ একর জমির ওপরে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামে আবাসিক পল্লী নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Bourhan Uddin Younus Mia ১৬ মার্চ, ২০২১, ১:০০ এএম says : 0
এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে আমাদের অর্থনীতি...
Total Reply(0)
Shakib Hassan ১৬ মার্চ, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
পরে কি এই বিদ্যুৎ ভারতে পাঠানো হবে?
Total Reply(0)
Abdurrahim Salman ১৬ মার্চ, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
এতো বিদ্যুৎ থাকতে ভারত থেকে কেন বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়? কার সার্থে এসব করা হয়?
Total Reply(0)
Jpb Shimul Barua ১৬ মার্চ, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
দেশের বেকার ছেলেদের কর্মসংস্থান সুযোগ দিন।
Total Reply(0)
Md Sagar Hossain ১৬ মার্চ, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
লোডশেডিং দিন দিন বেড়েই চলছে,,,গরম মৌসুমে তো লোডশেডিং এর চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে ফেলেন,আর ভূতুড়ে বিল তো আছেই,,
Total Reply(0)
MD Imran Khan ১৬ মার্চ, ২০২১, ১:০২ এএম says : 0
কিন্তু আপনার কি একটা বার ভেবে দেখেছেন 1 ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে কত টাকা ব্যয় হয় আর কত টাকা আপনারা দেন বিদ্যুৎ বিভাগকে
Total Reply(0)
H M Hossen Nurul ১৬ মার্চ, ২০২১, ১:০২ এএম says : 0
৯৯ % টাকা মন্ত্রী ও আমলারা মেরে খাওয়ার পরে, ১% টাকা দিয়ে এতো বড় কাজ করার জন্য আপনাদেরকে অভিনন্দন
Total Reply(0)
Golam Rabbani ১৬ মার্চ, ২০২১, ৯:০১ এএম says : 0
মাশাআল্লাহ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন