বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

আকাশে বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দারাও দেখতে পাচ্ছে বাংলাদেশের চ্যানেল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২১, ৭:৪০ পিএম | আপডেট : ৭:৪১ পিএম, ২১ মার্চ, ২০২১

দেশ বিভাজনে বিচ্ছিন্ন হওয়া বাংলাদেশ-ভারতের ছিটমহলগুলো ২০১৫ সালে বিলুপ্ত হলেও এর বাসিন্দাদের কাছে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে জানার কোন সুযোগ ছিল না এতোদিনেও। প্রায় ৭৪ বছর পর বিলুপ্ত ছিটমহলে এখন আধুনিক টিভি সংযোগ পৌঁছে গেছে ডিটিএইচ সেবাদাতা ব্র্যান্ড আকাশের হাত ধরে। সাবেক ‘ছিট মহলবাসীরা’ টেলিভিশন দেখে তথ্য ও বিনোদন জগতের নতুন পৃথিবীতে সংযুক্ত হচ্ছেন।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের প্রক্রিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের সীমারেখা আকেঁন ব্রিটিশ আইনজীবি সিরিল জন র‌্যাডক্লিফ। র‌্যাডক্লিফের কলমের খোঁচায় রাষ্ট্রহীন মানুষ হয়ে পড়েন বাংলাদেশের লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার সীমান্ত এলাকায় এবং ভারতের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলার সীমান্ত এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছিটমহলগুলোর বাসিন্দারা। ‘ছিটের লোক’, ‘নেই মানুষ’, ‘নিজভূমে পরবাসী’ নামে ডাকা হতো তাদেরকে। পরষ্পর বিচ্ছিন্ন এ ছিটমহলের মানুষরা চাইলেও বৈধভাবে নিজদেশের মূল ভূখ-ে যেতে পারতেন না। খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার মত মৌলিক অধিকার থেকেও তারা অনেকটা বঞ্চিত ছিলেন। পরিচয় গোপন করে কিছু সেবা গ্রহণ করলেও রাষ্ট্রের চোখে তা ছিল অপরাধ।

বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ভারতের মানুষ ও ভারতের ভেতরে থাকা বাংলাদেশের মানুষরা ২০১৫ সালে পছন্দমত দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের সুযোগ পান। ৬৮ বছরের সেই অবরুদ্ধতার অবসান ঘটলেও তথ্য যোগাযোগ ও বিনোদনের মাধ্যমগুলো ছিল প্রায় বন্ধ। বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগের হাত ধরে এখন পৌঁছে গেছে টিভি দেখার আধুনিক সংযোগ সেবা ডিটিএইচ।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে ফিড নিয়ে ২০১৯ সালের মে মাসে সেবা প্রদান শুরু করে আকাশ। স্যাটেলাইট সংযুক্তি ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে আকাশ ব্যবহারকারীরা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে উন্নত এবং একইমানের ছবি-শব্দসহ টিভি দেখতে পান। বাংলাদেশে এমন সেবা শুধু আকাশই দিচ্ছে।

প্রত্যন্ত ও বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে ক্যাবল টিভি সংযোগ না পৌঁছানোর ফলে ওই এলাকাগুলোর জনগণ টিভি দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। অল্প কিছু পরিবার এন্টেনা সেট করে বিটিভি দেখার সুযোগ পেতেন। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের এই বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোকে তথ্য-বিনোদনের প্রবাহে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে বেক্সিমকো কমিউনিকেশন্সের ডিটিএইচ ব্র্যান্ড আকাশ। সেই ধারবাহিকতায় বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে ডিটিএইচ সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে আকাশ এবং দেশের সব ধরনের উন্নয়ন ও অগ্রগতির খবর জনতে পারছেন তারা। এর ফলে এই প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের সামনে দেশ-বিদেশ দেখার-জানার নতুন রোমাঞ্চকর দুনিয়া খুলে গেছে।

বিলুপ্ত ছিটমহল দহগ্রামের বাসিন্দা ওবায়দুর রহমান বলেন, দেশ জানার ও পৃথিবী দেখার সুযোগ আমাদের কখনও হয়নি। এখন ঘোরার সুযোগ আসলেও শারিরিক শক্তি নেই। তবে আকাশ সংযোগ পেয়ে টিভি দেখার মাধ্যমেই বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক কিছু দেখতে পাই, জানতে পারি।

আকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডিএস ফয়সাল হায়দার বলেন,টিভি শুধু বিনোদন নয়, অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য জানারও মাধ্যম। দেশের প্রত্যন্ত ও বিচ্ছিন্ন এলাকার মানুষ এতোদিন দেশীয় তথ্য ও বিনোদন পাওয়ার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এখন এ বিচ্ছিন্ন জনপদের মানুষকে তথ্য ও বিনোদনের দুনিয়ায় যুক্ত করছে আকাশ। তিনি বলেন, শুধু ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নয়, মানুষে মানুষে সেতু তৈরি এবং আরও নাগরিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোকে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দহগ্রামসহ অন্যান্য বিলুপ্ত ছিটমহল এলাকায় আকাশ সংযোগ পৌঁছে দেয়া সে প্রচেষ্টারই অংশ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পুর্তিতে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের দেখার তিয়াস মিটাবে আকাশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন