পাঞ্জাবী-টুপি পরার অজুহাতে ১২ বছরের চাকুরী জীবন নিমিষেই শেষ করার পাঁয়তারা করছে সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টমেন্ট স্কুল এন্ড কালেজ কর্তৃপক্ষ। ধর্মীয় তথা ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর কর্তৃপক্ষের এ অবৈধ হস্তক্ষেপের ঘটনায় আজ (শনিবার) সকাল সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। তারা অবিলম্বে এ দুই শিক্ষককে ক্লাসে যোগদানের সুযোগ সহ তাদের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবী তুলেছেন দীর্ঘ ১ ঘন্টার মানবন্ধনে। সিলেট তামাবিল সড়কের জেসিপিএসসি ফটকে এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেন প্রায় জালালাবাদ ক্যান্টমেন্ট স্কুল এন্ড কালেজের প্রাক্তন ও বর্তমান প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা এহেব ব্যবস্থাকে ব্যক্তিস্বাধীনতা পরিপন্থি আখ্যায়িত করেন বলেন, পাঞ্জাবী-পাজামা-টুপি উপমহাদেশীয় সংস্কৃতির অংশ, সেই সংস্কৃতিকে ধর্মীয় বিবেচনায় না নিয়ে, ব্যক্তি স্বাধীনতার বিচারে দেখতে হবে। কেন প্রাশ্চাত্যের পোষাক পরতে বাধ্য করবেন কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, অনৈতিক, অগ্রনতান্ত্রিক এহেন সিদ্ধান্তের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে হবে অবশ্যই, সেই সাথে যথাযথ সম্মানে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনতে হবে এ দুই শিক্ষককে। তবে এ দুই শিক্ষকের ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার মধ্য থেকেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অথচ চাকুরীতে যোগদানকালেই এ দুই শিক্ষক পোষাকের ব্যাপারে নিজস্ব দৃষ্টিভংগির ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি আদায় করেছিলেন। সেকারনে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চাকুরী করলেও পোষাক ও টুপি নিয়ে কোন বাধা আসেনি। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে বারবার শোকজ করে শার্ট ও প্যান্ট পরতে নির্দেশনা দিতে থাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ম্যাগাজিন ‘প্রোজ্জ্বল’-এর ছবি তোলার জন্য শিক্ষকদের পাঞ্জাবি-টুপি পরার পরিবর্তে শার্ট প্যান্ট পরতে আদেশ দেন অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল কুদ্দুছুর রহমান পিএসসি। সেই আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান জেসিপিএসসির কলেজ পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক সিনিয়র প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির শিক্ষক প্রভাষক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম। এ আদেশ অমান্য করায় স্কুলে আসতে বারণ সহ বেতন ভাতা বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানো গত ৩১ মার্চ রাতে। প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ মৌখিকভাবে ক্যাম্পাসে আসতে নিষেধ সহ একই সাথে বেতন ভাতা বন্ধের বিষয়টি করেন অবহিত।
জানা যায়, গত বছর আগের অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল সোহেল উদ্দিন পাঠান প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুসারে নির্দেশ প্রদান করেন পাঞ্জাবি পরা যাবে না কলেজে। পরবর্তীতে ১১ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির মিটিংয়ে বিষয়টি তুলে তা পুরোপুরি বাস্তবায়নে নির্দেশ প্রদান করেন তিনি। সবাইকে এই আদেশ মান্য করতে বলা হলেও কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হালিম, মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম ও কবির হোসাইন এতে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। চলমান এ পরিস্থিতিতে কলেজ ম্যাগাজিনের জন্য ছবি তোলার নির্ধারিত দিনেও পাঞ্জাবী-টুপি পরে আসনে এ দুই শিক্ষক। কিন্তু প্রিন্সিপাল এ অবস্থায় ছবি উঠতে নিষেধ করেন তাদের। এছাড়া প্রিন্সিপাল এসময় আদেশ দেন, প্রতিষ্টানের নীতমালা অমান্যকারীরা যাতে স্বেচ্ছায় চাকুরি ছেড়ে দেন নতুবা করা হবে বরখাস্ত তাদের। কলেজ প্রিন্সিপালের সেই আদেশের পথেই ক্যাম্পাসে নিষেধ সহ বেতনভাতা বন্ধের মৌখিক সিদ্ধান্ত জানানো হয় দুই শিক্ষককে।
শিক্ষক আবদুল হালিম বলেন, চাকুরিতে যোগদানের সময় লিখিতভাবে পাঞ্জাবি-পাজামার টুপি পরার অনুমতি নিয়েছিলেন তিনি। গত ১২ বছর ধরে এই পোশাক পরেই চাকুরী করে আসছেনও। গতবছর অধ্যক্ষ (সোহেল উদ্দিন পাঠান) স্যার প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার কথা বলে শার্ট প্যান্ট পরে আসতে চাপ দিতে থাকেন তাকে। কিন্তু সেই চাপের কাছে নতি শিকার করেননি তিনি। তবে তাকে সেকারনে ৪/৫ বার শোকজের মুখে পড়তে হয়নি। সম্প্রতি কলেজ ম্যাগাজিনে ছবি তোলার দিন একই প্রসঙ্গে চাপ প্রয়োগ
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন