জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের মতই বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসেও ১০০ মিটার প্রিন্টে সেরা হয়ে দেশের দ্রুততম মানব-মানবীর খেতাব জিতেছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মো. ইসমাইল ও শিরিন আক্তার। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৪৪তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণপদক জিতে দ্রুততম মানব-মানবী হয়েছিলেন দেশসেরা এ দুই অ্যাথলেট। তিন মাসের ব্যবধানে ট্র্যাকে ফের তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেন।
গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ট্র্যাকে বাংলাদেশ গেমসের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের পুরুষ বিভাগে নৌবাহিনীর ইসমাইল ১০.৫০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌঁড় শেষ করে সোনা জিতে নেন। একই সংস্থার আব্দুল রউফ ১০.৬০ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য ও বিমানবাহিনীর নাইম ইসলাম ১০.৭০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জপদক পান। একই ভেন্যুতে এই ইভেন্টের নারী বিভাগে নৌবাহিনীর শিরিন আক্তার ১১.৬০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শরীফা খাতুন ১১.৭০ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য এবং বিকেএসপির সোনিয়া আক্তার ১২.১০ সেকেন্ড সময়ে জিতে নেন ব্রোঞ্জপদক।
বাংলাদেশ গেমসে সেরা হতে পেরে খুশি হলেও নিজের টাইমিং নিয়ে সন্তুষ্ট নন ইসমাইল। তাই তো দ্রুততম মানবের খেতাব জেতার পর তার কন্ঠে কিছুটা হতাশার সুর,‘করোনার কারণে নিয়মিত অনুশীলন করতে না পারায় বাংলাদেশ গেমসে টাইমিং তেমন ভালো হয়নি। সর্বশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে এই ট্র্যাকেই আমার টাইমিং ছিল ১০.৫৫ সেকেন্ড। আর আগের আসরে চট্টগ্রামে ঘাসের ট্র্যাকে ছিল ১০.৪০। ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশ গেমসে আরও ভালো টাইমিং করার। কিন্তু করোনাভাইরাস অনুশীলনে ব্যাঘাত ঘটিয়ে সবকিছু উলট-পালট করে দিলো।’ ইসমাইল যোগ করেন,‘করোনা মহামারী শেষ হলে আপনারা আমার ভালো একটা টাইমিং দেখতে পাবেন বলেই আশাকরছি। সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে সেরা হতে চাইলে আরও ভালো টাইমিং করা জরুরি। আমি চেষ্টা করে যাবো। আরও উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে সফল হবো বলে আশাকরছি। এখন বাংলাদেশ গেমসে স্বর্ণপদক পেয়েছি, এটাই শুকরিয়া।’
অন্যদিকে শিরিন আক্তার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও সামার মিট মিলিয়ে টানা ১১ বার দেশের দ্রুততম মানবীর খেতাব জিতে রেকর্ডবুকে নাম লিখিয়েছেন আগেই। এবার বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসে সেরা হয়ে সেই রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করেছেন নৌবাহিনীর সেরা এই নারী অ্যাথলেট। কাল স্বর্ণ জিতে ফের আনন্দে ভাসলেন শিরিন। বললেন, ‘আমি ট্র্যাকে নামি সেরার খেতাব জিততেই। বাংলাদেশ গেমসে স্বর্ণ জিতে খুব ভালো লাগছে। করোনাকালে নিজের টাইমিংয়ে সন্তুষ্ট আমি। এ বছরের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে আমার টাইমিং ছিল ১১.৮০। এর আগে চট্টগ্রামে ছিল ১২.১০ সেকেন্ড। আর এবার ১১.৬০। চেষ্টা করবো আরও ভালো টাইমিং করতে।’
শিরিন যোগ করেন,‘বাংলাদেশ গেমসে এটা আমার প্রথম স্বর্ণ জয়। এর আগে অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে বিউটি আপার কাছে ফটোফিনিশিংয়ে হেরে দ্বিতীয় হয়েছিলাম। আমার স্বর্ণ জয়ের পিছনে অবদান বাংলাদেশ নৌবাহিনী, অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ)। সর্বোপরি আমি বিকেএসপি থেকে ট্রেনিং করি। যত রকম সুযোগ সুবিধা সব তারা আমাকে দিয়েছে। আমার কোচ আব্দুল্লাহ হেল কাফি অনেক পরিশ্রম করছেন। আমি টানা ১২বার দেশের দ্রুততম মানবী হয়েছি,এটাই বাংলাদেশে রেকর্ড।’
সাতক্ষীরার এই অ্যাথলেট আরও বলেন,‘আমার এখন একটাই স্বপ্ন, সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে সেরা হওয়া। আল্লাহ সহায় থাকলে এবং ঠিক মতো অনুশীলন চালিয়ে গেলে হয়তো নিজের স্বপ্নপূরণ হবে। আমি বিদেশ থেকে দেশের জন্য স্বর্ণপদক জিততে চাই। সবার দোয়া থাকলে এবং নিজের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারলে ইনশাল্লাহ নিজের ইচ্ছাপূরণ করতে পারবো আমি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন