নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে। গতকাল মঙ্গলবার সিআইডির সদর দপ্তরে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান। এছাড়াও গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে তাতে ইন্ধনদাতা, নির্দেশদাতা ও সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান।
অন্যদিকে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন-অর রশিদ বলেন, আমরা মাওলানা মামুনুল হককে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। অনেক বিষয়েই তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তার দেয়া বক্তব্য খতিয়ে দেখছি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সিআইডির প্রধান জানান, মামুনুল হক বর্তমানে অন্য একটি মামলায় রিমান্ডে আছেন। সেটির রিমান্ড শেষ হলে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করবে সিআইডি। এরই মধ্যে হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা ২৩টি মামলার তদন্তভার পেয়েছে সিআইডি। ২৩টি মামলার মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ ২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১৫, কিশোরগঞ্জ ২, চট্টগ্রাম ২ মুন্সিগঞ্জের ২টি। হত্যা, বিস্ফোরক, নাশকতাসহ নানা অভিযোগে এসব মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম মার্চ মাসের শেষ থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে জ্বালাও-পোড়াও করেছে, আগুন নিয়েছে, অবরোধ করেছে, হরতালের ডাক দিয়েছে। যা প্রচলিত আইনানুযায়ী অন্যায়। আমাদের ফরেনসিক, ডিএনএ, অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তা রয়েছেন, সাইবার এক্সপার্ট রয়েছেন। তারা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছেন।
এসব মামলায় মামুনুল হকের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে কিনা- জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। কোন মামলায় তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে নারায়ণগঞ্জে দায়ের করা মামলায় তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আমরা মামলাগুলো পর্যালোচনা করছি। যদি অন্য কোনো মামলাতেও তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাহলে আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে। আমাদের একাধিক টিম এসব বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে।
বাবুনগরীসহ হেফাজতের অন্য ঊর্ধ্বতন নেতাদের সংশ্লিষ্টতা পেলে বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা এসব মামলায় প্রাথমিক তদন্তে তিন ধরনের লোকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। যারা উপস্থিত থেকেছে, অনুপস্থিত থাকলেও ইন্ধন দিয়েছে এবং দুষ্কর্মে যারা সহযোগিতা করেছে। বাবুনগরীসহ অন্য কারো সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে বলছি না। তবে যদি কারো সংশ্লিষ্টতা পাই তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের চোখে সবাই সমান। আমরা দ্রুত মামলাগুলো নিষ্পত্তি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মামলায় যদি কোনো জনপ্রতিনিধির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে সিআইডি প্রধান বলেন, আমরা আইন অনুযায়ী কাজ করি। তদন্তে যারই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ আইনের চোখে সবাই সমান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন