চারিদিকে সানসুন। হল ভর্তি সব দর্শকদের চোখ তখন চমৎকার মঞ্চটির দিকে। একটু পরপরই আলো নিভছিল। আর বেজে উঠছিল করতালি। কখনো নীরবতা, আবার কখনো হাসি।
বাস্তবতার সঙ্গে মিলে যাওয়া দৃশ্যগুলো চোখে নিয়ে আসছিল মুগ্ধতার জল! কালজয়ী লেখক উইলিয়াম শেক্সপিয়রের রোমিও-জুলিয়েট নাটক মঞ্চায়নে চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে (ইডিইউতে) ছিল এমনি দৃশ্য।
বইয়ের পৃষ্ঠা থেকে সেলুলয়েড কিংবা মঞ্চ। সব খানেই জনপ্রিয় হয়েছে ইতিহাসের এই প্রেমগাঁথা। তবে ইডিইউর ছাত্রছাত্রীদের আয়োজনে এবারের পরিবেশনায় নাটকটির মঞ্চায়ন ছিল একেবারেই অন্যরকম। শেক্সপিয়রের চারশত জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্প্রতি নগরীর প্রবর্তক মোড়ের বর্ধিত একাডেমিক ভবনে নাটকটি মঞ্চস্থ করলো ছাত্রছাত্রীরা।
পুরো মঞ্চটি সাজানো হয়েছিল ৪০০ বছর আগের গ্রিক সংস্কৃতির আবহে। বয়সে তরুণ আর টগবগে ছেলেমেয়েগুলো অবাক করে মিশে গিয়েছিল রোমিও-জুলিয়েটের প্রতিটি চরিত্রে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গ্রিক সঙ্গীত পরিবেশন করে সুরের মূর্ছনায় ভাসিয়ে দেন দুই ছাত্রী কোমল আর তাফরিহা।
এরপর রোমিও-জুলিয়টের বিয়োগান্ত প্রেমের গল্প দর্শকদের কিছুটা সময়ের জন্য নিয়ে গিয়েছিল বহুকাল আগে। যেখানে প্রেমের কাছে সবকিছুই ছিল একেবারে তুচ্ছ। গভীর প্রণয় আর পরিবারের বাইরে গিয়ে দুটি মনের দেখাদেখি। কখনো আনন্দ ভাসিয়েছে হল ভর্তি দর্শকদের। নাটকের শেষ দৃশ্যে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে সবার মাঝে। তরুণ যুগলের ভালোবাসার জন্য মৃত্যুবরণ মানুষের আবেগকে নাড়া দেয় ভীষণ করে।
নাটকে রোমিও চরিত্রে সামিন ও জুলিয়েটের ভূমিকায় রিয়ার প্রাণবন্ত অভিনয় প্রশংসা কুড়ায় দর্শকদের। অন্যান্য চরিত্রে যারা অংশ নেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাজন, নাসরিন, ওয়াফি, আনুশাহ, আবির, রিদভী, জয়, ফারদিন, সুমিত, রনো, তারেক, আলভী, সাকিব, শোভন, হাবিব ও কাওসার। ব্যাকগ্রাউন্ড সঙ্গীত, নৃত্য ও শিল্প সজ্জায় ছিলেন মিনার, রাইসা, জেনী, মিথিলা, রনো ও সামিয়া। পুরো নাটকটির বিভিন্ন ধারা বর্ণনায় ছিলেন সাফা ইকবাল।
অনুষ্ঠানে রোমিও-জুলিয়েট মঞ্চায়নের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করেন ইডিইউর উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান, ট্রেজারার প্রফেসর শামস উদ দোহা, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, লেকচারার ও নাটকের সমন্বয়ক সাবরিন সারওয়ার প্রমুখ।
ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান শাহ আহমেদ রিপন রোমিও-জুলিয়েট মঞ্চায়নের বিষয়ে বলেন, নাটকটির একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। তবে দৃশ্যায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা এর শৈল্পিক নানা দিকও জানতে পেরেছেন। আগামীতে আরো বড় পরিসরে শেক্সপিয়রের নাটকগুলো মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
ষ মহিউদ্দীন জুয়েল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন