দীর্ঘ ৪৯ দিন পরে দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানী সহ সারা দেশের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরন নিয়ে কারো তেমন কোন গরজ লক্ষ্য করা যায়নি। এমনকি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্বম বরিশাল নদী বন্দর সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নৌ বন্দর ও শতাধীক লঞ্চঘাট আবার প্রাণ ফিরে পেলেও করেনার এ মহাসংকটকালে স্বাস্থ্য বিধি মানা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহলে। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ-এর প্রাক্কালে গত ৫ এপ্রিল থেকে ঢাকা সহ সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি বিগত ঈদ উল ফিতরের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ পায়ে হেটে মাওয়া পৌছে জীবনের ঝুকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে দক্ষিনাঞ্চলে যাতায়াত করে। সরকারী শত প্রচারনায়ও ঈদে ঘরমুখি জনশ্রোত ঠোকান যায়নি।
অপরদিকে গত বছর ২৫ মার্চ থেকে করোনর প্রথম ঢেউ এবং চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ঢেউ-এর কারনে সারা দেশের যাত্রীবাহী নৌযোগাযোগ বন্ধ থাকায় চরম বিপর্যয়ে পরে বেসরকারী নৌপরিবহন খাত। দু দফায় প্রায় ৫ মাস নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় অন্তত ২৫ হাজার নৌযান শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়ে। বেশেীরভাগ নৌযান মালিকই শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করতে পারেন নি। অপরদিকে দক্ষিনাঞ্চলে নৌযান শিল্পে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকসমুহে বিপুল পরিমান বিনিয়োগও আটকে গেছে মাসের পর মাস নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় ।
বিপর্যস্ত নৌযান মালিক-কর্মচারীরা গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। এ অবস্থায় সড়ক পরিবহন সহ সব ধরনের গনপরিবহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ায় সোমবার সকাল থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের সব অভ্যন্তরীন রুট সহ রাজধনীর সাথে সড়ক ও নৌযোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার সদরঘারট থেকে সকল ৮টায় ৩টি ক্যাটামেরন বরিশল ও ভোলার উদ্যেশ্যে যাত্রা করলেও তাতে যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি অনুসরন না করার অভিযোগ ছিল। অথচ করোনার স্বাস্থ্য বিধির অজুহাতে ক্যাটামেরনগুলোর লোয়ার ডেকে ভাড়া ইতোমধ্যে ১শ টাকা বৃদ্ধিও করা হয়েছে। দুপুরে এসব নৌযান বরিশাল ও ভোলা থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকা ফিরতি যাত্রা করেছে।
সোমবার বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বরিশাল, পটুয়খালী ও ভোলা নদী বন্দর সহ ঝালকাঠী ও পিরোজপুরের বিভিন্ন স্টেশন থেকে অন্তত ৩০টি নৌযান ঢাকার উদ্যেশ্যে যাত্রা করছে। ঢাকা থেকেও সোমবার সন্ধা থেকে রাত ৯টায় অন্তত ৫০টি যাত্রীবাহী নৌযান বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চলের উদ্যেশ্যে যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হবার কথা।
তবে দক্ষিনাঞ্চল থেকে ঢাকামুখি নৌযানগুলোর ডেক শ্রেণীতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসুরনের খুব যোড়াল প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়নি। মালিক পক্ষ অবশ্য বিষয়টি যথেষ্ঠ গুরুত্বের সাথে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। বরিশাল সহ বিভিন্ন জেলা প্রশাসনও মঙ্গলবার থেকে এলক্ষে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনের কথা জানিয়েছেন।
অপরদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও মিনিবাস টার্মিনাল থেকে যেসব স্থানীয় ও দুড়পাল্লার বাসগুলো সোমবার সকাল থেকে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করেছে, তার সিংহভাগেই স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই ছিলনা। শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় বিআরটিসি’র বাস ছাড়া কোন বাসেই অর্ধেক আসন খালি রেখে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তরফ থেকেও সোমবার প্রথম দিনে তেমন কোন নজরদারী লক্ষনীয় ছিল না।।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন