কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ি রোডের চাঙ্গেনী মোড় এলাকায় মসজিদের বারান্দায় প্রকাশ্যে পিটিয়ে ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন হত্যা মামলার তদন্তের সারসংক্ষেপ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জমা দেয়ার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও চার্জশিট দিতে পারছে না পুলিশ। মামলাটির তদন্তের খুটিনাটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ।
নিহত ব্যবসায়ীর ছোট ভাই স্থানীয় যুবলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার শাহজালাল আলাল বলেন, গত মার্চ মাসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কুমিল্লার বিদায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান আমাদেরকে কার্যালয়ে ডেকে নেন এবং জানান মামলার এজাহার নামীয় ১০ আসামির মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা ৯ জনের বিরুদ্ধেই দ্রæত চার্জশিট দেয়ার দাবি জানালে তিনি আশ^াস দেন। কিন্তু এখনো চার্জশিট আদালতে দাখিল হয়নি। ওই পুলিশ কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়ে বদলি হয়ে যাওয়ার পর এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে চলে যাওয়ায় তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে এখন আর কিছুই জানতে পারছি না।
মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী রেখা আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে শত শত লোকের সামনে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হলো। সকল সাক্ষী প্রমান থাকার পরও চার্জশিট দিতে ১০ মাস সময় লাগার কথা নয়। তিনি ন্যায় বিচারের স্বার্থে এ বিষয়ে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার এস আই জসিম উদ্দিন জানান, আমি বর্তমানে খাগড়াছড়িতে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে আছি। মামলাটির চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিতে তদন্তের সারসংক্ষেপ গত ১৫ ফেব্রæয়ারি সিনিয়র অফিসারের নিকট জমা দিয়েছি। সিনিয়র অফিসাররা তদন্তের বিস্তারিত বিষয়গুলি দেখে তা পুনরায় থানায় ফেরত পাঠালেই চার্জশিট প্রদান করা হবে।
গত বছরের ১০ জুলাই কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ি রোডের চাঙ্গেনী দক্ষিণ বায়তুল নুর মোড় জামে মসজিদের বারান্দায় জুম্মার নামাজের পর কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে তার আত্মীয়স্বজনদের অতর্কিত হামলায় ঘটনাস্থলেই মারা যান ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন। এ হত্যাকাÐের ঘটনায় কাউন্সিলর আলমগীরসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী রেখা বেগম। হত্যাকাÐের দিনই পুলিশ কাউন্সিলর আলমগীরের তিন ভাই আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় গত বছরের ২৪ জুলাই কাউন্সিলর আলমগীরকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এ মামলায় কাউন্সিলর আলমগীর গত ৪ ফেব্রæয়ারি জামিন নিতে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গেলে তার আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক। পরে তিনি গত রমজানের আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন