বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার শিশু শিক্ষার্থী নুশরাত জাহান নোহার রহস্যজনক মৃত্যুর জট খুলেছে। শিক্ষকের বেত্রাঘাত ও প্ররোচনাতেই আত্মহত্যা করেছে স্থানীয় দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমীর ৩য় শ্রেণীর শিশু শিক্ষার্থী নুশরাত জাহান নোহা।
তদন্ত শেষে এ ব্যপাারে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। এ ব্যপারে আগৈলঝাড়া থানা ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার সাংবাদিকদের জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট, সাক্ষ্য প্রমান গ্রহন করে প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে নোহার স্কুলের শ্রেণী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম সুমন পাইককের বিরুদ্ধে নোহার আত্মহত্যায় প্ররোচনায় অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের সুমন মিয়ার দশ বছরের শিশু কন্যা নুশরাত জাহান নোহা স্থানীয় দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমীর ৩য় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। নোহাকে তার দাদা আব্দুর রহিম কিছু সম্পত্তি লিখে দেবার কথা জানাজানি হলে নোহার মৃত্যুর পরে অভিযোগের তীর ছিল নোহার সৎ মা ঝুমুর বেগম, ফুফু লিপি বেগমের দিকে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর করোনার মধ্যে সরকারের আইন অমান্য করে নোহার স্কুলের মাসিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রেণী কক্ষে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয় ৯ সেপ্টেম্বর। ওই পরীক্ষার ফলাফলে শিক্ষার্থী নোহা ৩০ মার্ক পেয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় স্কুলের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম সুমন পাইক নোহা সহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ক্লাশ রুমে গালমন্দ করে এলোপাতারী বেত্রাঘাত করে। নোহা স্কুল থেকে বাড়ি গিয়ে শিক্ষকের মারধর ও গালমন্দ সইতে না পেরে ঘরের দোতলায় আড়ার সাথে নিজের ওড়নার সাথে গামছা জোড়া লাগিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
মেয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে নোহার বাবা সুমন মিয়া নোহার স্কুল শিক্ষক সুমন পাইককে অভিযুক্ত করে ১০ সেপ্টেম্বর আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরেই আত্মগোপনে চলে যায় অভিযুক্ত শিক্ষক সুমন পাইক। অন্যদিকে শিশু নোহাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে নোহার গর্ভধারিনী মা তানিয়া বেগম নোহার জন্মদাতা পিতা ও তার সাবেক স্বামী সুমন মিয়া, সুমনের চতুর্থ স্ত্রী (নোহার সৎ মা) ঝুমুর জামান এবং সুমনের বিবাহিত বোন লিপি বেগমকে আসামী করে ১৪ সেপ্টেম্বর বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু সেটি এখন পর্যন্ত আদালতে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন