হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার মতো কোনো তথ্য হাতে পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো থেকে তথ্য-উপাত্ত পেলেই হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাবাদ শুরু করবে। প্রয়োজনে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে। এ তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বুধবার সেগুনবাগিচাস্থ দুদক কার্যালয়ে সচিব ড.মু.আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এ কথা জানা। তিনি বলেন, ন্যূনতম তথ্য ছাড়া তো হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না।
হেফাজত নেতাদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানতে চাইলে মু.আনোয়ার হোসেন হাওলাদার আরও বলেন, তথ্যের জন্য আমাদের যেসব জায়গায় যোগাযোগ করা দরকার সেখানে যোগাযোগ করেছি। তথ্য-উপাত্ত চেয়েছি। তবে এখনও তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা ‘বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের’ (বিএফআইইউ) কাছে তথ্য চেয়েছি। সম্ভবত আমাদের (দুদকের) রেফারেন্সে বিএফআইইউ বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠিপত্র দিয়েছে। তাছাড়া হেফাজত নেতাদের স্থাবর সম্পত্তির তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
দুদক সচিব বলেন, তদন্ত কর্মকর্তাদের এখতিয়ার দেয়া আছে। তারা যদি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন মনে করেন তাহলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। একেবারে কিছু কাগজপত্র না পেয়ে তো জিজ্ঞাসাবাদ করা যায় না।
মোট ৫০ জন হেফাজত নেতার তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য আসেনি। আমাদের তো কিছু তথ্য লাগবে। ডিবি এ বিষয়ে তদন্ত শেষ করেছে। দুদক ডিবির তথ্য নেবে কি-না-এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, ডিবির কাছে থাকা তথ্য যদি তারা দেয়, তবে আমরা অবশ্যই আমলে নেব। ইমিগ্রেশনে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের বিদেশযাত্রার ও পাসপোর্ট সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে তাদের বিদেশযাত্রার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত: গত মাসে হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকসহ সংগঠনের অর্ধশত নেতার অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে তথ্য চেয়ে নির্বাচন কমিশনসহ ১১ অফিসে চিঠি দেয় দুদক। এছাড়া হেফাজত নেতাদের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদকের পরিচালক আকতার হোসেন আজাদের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। দুদক হেফাজত ও তাদের সঙ্গে সংশ্নিষ্ট ৫৪ নেতার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছে। সংগঠনটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি টাকার লেনদেন, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদের অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুদক। উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ নূরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ, মো. সাইদুজ্জামান এবং উপসহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান দুদক টিমের সদস্য।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন