পাল ও গুনটানা নৌকা যুগের অবসান ঘটলেও ফের ভিন্ন আঙ্গিকে ফিরে আসছে ওই নৌকা। প্রাণ ফিরে পাচ্ছে পুরনো নৌকার ঘাট বা ছোটখাট নৌ বন্দর সমুহ। কর্মসংস্থান হচ্ছে নৌকা কেন্দ্রিক বৈঠার মাঝি ও তাদের সহকারি সহ নৌকা নির্মানের সাথে জড়িত শতশত মানুষের।
বাড়ছে নৌকার যাত্রী, ভ্রমনকারি। বাড়ছে নৌপথে তুলনামুলক অনেক সস্তায় পন্য পরিবহণ।
গত সপ্তাহ জুড়ে গাইবান্ধার,ফুলছড়ি, সাঘাটা, বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকন্দি, ধুনট, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পর্যন্ত ২শ’ কিলোমিটার নৌপথ ঘুরে দেখা গেছে বালাসি, মেঘাই, সারিয়াকান্দির মত নৌবন্দর গুলো নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এবং নৌ পথে ভ্রমনে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বাড়ায় এই খাতে আয় বাড়ছে মাঝি ও তাদের সহকারিদের। বাস/ট্রাক/কার/মাইক্রোর মত নৌকা খাতেও এখন বিনিয়োগ হচ্ছে কোটি কেটি টাকা। বহু জায়গায় গড়ে উঠেছে নৌকা তৈরী ও মেরামতি কারখানা।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় মেঘাই নৌ-বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে সারিসারি নৌকা বাঁধা। সবগুলোই ইঞ্জিন চালিত। আছে ভ্রমন বা দ্রুত যাতায়াতের জন্য স্পিডবোটও। কথা প্রসঙ্গে একটি স্পিডবোটের পার্টটাইম চালক ও ইন্টার ক্লাসের কলেজ ছাত্র মাসুদ জানালো, করোনায় ক্লাস বন্ধের পর থেকে সে স্পিডবোটের চালক হিসেবে কাজ করছে । আগে পার্টটাইমার থাকলেও এখন ফুলটাইম জব করে মাসে বেতন পাচ্ছে ১৩ হাজার টাকা । সামনে এই বেতন বেড়ে ১৬ হাজার টাকায় উন্নিত হবে বলেও জানালো সে।
মাসুদ জানালো এখন অফ সিজন , তাই যাত্রী ও ভ্রমনকারির সংখ্যা কম। ঈদের ছুটি ও নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে পিক সিজন তখন মেঘাই ঘাটে ভ্রমনকারিরা থৈ থৈ করে ।
একই ঘাটের কয়েকজন ইঞ্জিন চালিত নৌকার মাঝি জানালো , নদনদীর পানি শুণ্যতা জনীত কারণ ছাড়াও ব্যাপকভাবে সড়ক উন্নয়নের কারণে নৌকা প্রায় বিরুপ্তই হয়ে যাচ্ছিল । কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিস্তা,ধরলা,যমুনা নদীর চরাঞ্চলে বসবাসকারি লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন তাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরাঞ্চলে যাতায়াত বেড়েছে বহুগুন। নানা প্রয়োজনে শহরের মানুষকেও যেতে হয় চরাঞ্চলে সেকারনেই নৌকার প্রয়োজন দেখা দিয়েচে নতুন করে।
ইঞ্জিনচালিত নৌকা দ্রুত গতি সম্পন্ন হওয়ায় পাল তোলা ও গুনটানা নৌকার প্রয়োজনীয়তা নেই বলেও জানাল মাঝিরা। বালাসি ঘাটের পেশাদার মাঝি শাহীন মিয়ার মতে সড়ক পথে যানজটের সমস্যা এড়াতেও বহু মানুষ এখন নৌ-পথ ব্যবহার করছে।
লক্ষ্য করা গেছে , প্রত্যেকটি নৌ-বন্দর বা নৌ-ঘাটের আশেপাশে প্রচুর পরিমানে নৌকা তৈরী হযেছে । কোথাও কোথাও মোটর যানবাহনের ওয়ার্কশপের আদলে গড়ে উঠেছে নৌকা নির্মানের কারখানা । ঙ্গ লাখ থেকে ৫/১০/ ২০ লাখ টাাকাতে তৈরী হচ্ছে নৌকা।
লাভজনক হওয়ায় ানেক কোটিপতিও নৌকা নির্মান ও নৌ-পরিবহন ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে কোটি কোটি টাকা ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন