উত্তর : এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ্ বলেন, হে লোকেরা, আল্লাহ্ তাআলা হলেন পূতঃপবিত্র। কাজেই তিনি পবিত্র ছাড়া অপর কিছুই গ্রহণ করেন না। আর তিনি মু’মিনদেরকে সে নির্দেশই দিয়েছেন, যা তিনি তাঁর রাসূলগণকে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘হে রাসূলগণ, তোমরা পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো এবং সৎ কর্ম করো। আমি তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে সম্যক অবহিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘হে মু’মিনগণ, তোমরা আমার প্রদত্ত রিয্ক থেকে পবিত্র বস্তুগুলোই ভক্ষণ করো।’ তারপর তিনি এমন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন যে দীর্ঘ সফর শেষে মলিন শরীরে দু’হাত বাড়িয়ে আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করে, হে আমার রব, হে আমার রব! (এভাবে দু’আ করতে থাকে) অথচ তার আহার্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, অধিকন্তু সে হারাম দ্বারা পরিপুষ্ট হয়েছে, তা হলে কীভাবে তার দু’আ কবুল হতে পারে।
একজন মু’মিন হালাল ও বৈধ উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও আয়-উপার্জন করবে এবং তাকে সন্দেহযুক্ত যাবতীয় বিষয় থেকেও বিরত থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ্ বলেন, ‘নিশ্চয়ই হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। তবে এতদুভয়ের মধ্যে কতিপয় সন্দেহজনক বিষয় রয়েছে, যা অনেক লোকেই জানে না। অতএব, যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বিষয় থেকে নিজেকে রক্ষা করলো, সেই মূলত নিজের দীন ও ইয্যাত-আব্রুকে রক্ষা করলো।’
রাসূলুল্লাহ হালাল ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে উপার্জন সন্ধান করাকে ফরয হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘হালাল রুজি সন্ধান করা মৌলিক ফরযের পর একটি ফরয।’
অপর হাদীসে নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে উপার্জন করাকে সর্বোত্তম উপার্জন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। হযরত রাফে ইব্ন খাদীজ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ এর কাছে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ধরনের উপার্জন সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা করা।’
আল্লামা আশ-শারকাভী রহ. তার হাশিয়াতে বলেন, রাসূলুল্লাহ বলে হালাল ব্যবসার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
ইসলাম বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী ব্যবসায়ীকে অত্যন্ত সম্মান প্রদর্শন করেছে। রাসূলুল্লাহ্ বলেন, ‘বিশ্বস্ত সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন শহীদগণের সঙ্গে থাকবে।’
একবার বিশিষ্ট তাবিঈ ইবরাহিম আন-নাখঈ রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হয় যে, এক ব্যক্তি ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে কেবল আল্লাহ্র ধ্যানেই নিমগ্ন থাকে আর অপর এক ব্যক্তি ব্যবসা-বাণিজ্য করে, তাদের মধ্যে কে উত্তম? তিনি জবা দিলেন, ‘বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীই।’
রাসূলুল্লাহ্ হালাল উপায়ে রুজি-রোযগার ও ব্যবসা-বাণিজ্য করাকে জিহাদের অন্তর্ভূক্ত বলে অভিহিত করেছেন। যেমন আবদুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হালাল রুজি তালাশ করা (তথা হালাল উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করা) জিহাদের সমতুল্য।’
উত্তর দিচ্ছেন : মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন