করোনার প্রভাব পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী ও দেশের একমাত্র সূর্যপুরী আমে এবার করোনার প্রভাবে মার খাচ্ছে। গত বছর করোনার মধ্যেও এই আমের ব্যবসা ছিল রমরমা। বিদেশেও সূর্যপুরী আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মাটি ও আবহাওয়ার কারণে ঠাকুরগাঁও ছাড়া দেশের অন্য কোথাও সূর্যপুরী আম হয় না।
গত বছর করোনার সময় বাজারে সূর্যপুরী আম প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৫০ থেকে ১০০ টাকায়। কিন্তু এবার ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় বাজারগুলোতে পাকা আম বিক্রি হচ্ছে মাত্র সাত টাকা কেজি দরে। আর কাঁচা আমের দাম কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা। গত তিন দিনের সীমিত লকডাউনে বলতে গেলে বাজার অনেকটা ফাঁকা ছিল। বাজার সূর্যপুরী আমে ঠাসা থাকলেও ক্রেতা কম হওয়ায় বিক্রিতে বিপর্যয় ঘটেছে।
অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর পাইকারি ক্রেতাদের আম কেনার চাহিদা একেবারেই কম। লকডাউনে ঠাকুরগাঁও জেলার বাইরে আম নিয়ে যেতে পাইকারদের অনীহা। তারপরও পৌর শহরসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বসেছে স্থায়ী ও অস্থায়ী আমের হাট।
গত তিন দিন ধরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার কালিবাড়ি বাজার, কালেক্টরেট চত্বর, বাসস্ট্যান্ড, সত্যপীর ব্রীজ, গোধুলী বাজার, সেনুয়া হাট, খোচাবাড়ী হাট, লাহিড়ী হাট, স্কুলহাট, কুশালডাঙ্গী, হলদিবাড়ীসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে ব্যবসায়ীরা আম নিয়ে বসে থাকলেও বাজারে ক্রেতা নেই।
স্থানীয়রা তেমন আম কিনছেন না। কেননা সবার বাড়িতে না হলেও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে সূর্যপুরী আম গাছ রয়েছে। এতে করে বিক্রির পাশাপাশি সবাই মিলেমিশে এই আম খেয়ে থাকেন। আর এবার জেলার বাইরে থেকে আমের ক্রেতা আসেনি বললেই চলে। বিক্রি না হওয়ার কারণে পাকা আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
গত তিন বছর ধরে অনলাইনে সূর্যপুরী আম বিক্রি করছেন কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে তানভীর, মিলন ও পায়েল নামে তিনজন জানান, গত বছর করোনার সময় তারা অনলাইনে প্রায় ২০০ মণ আম বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এবার অনলাইনে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত তারা তিনজন মিলে ২০ মণ আমের অর্ডারও পাননি।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার সূর্যপূরী আমের সুনাম সারা দেশে রয়েছে। এই আমে পোকা থাকে না- এটা এখানকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। আমের আকার দেখতে ছোট হলেও স্বাদ-গন্ধ অতুলনীয়। এবার জেলায় আমের ভালই ফলন হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন