সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক বিধিনিষেধ গতকাল বৃহষ্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। এ বিধিনিষেধ থাকবে আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। বিধিনিষেধের মধ্যেও নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং ও পরিশোধ সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে। বিধিনিষেধ চলাকালে গ্রাহক এটিএম বুথ থেকে দিনে এক লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট-পিএসডি থেকে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
দেশের সকল তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার এবং সকল পেমেন্ট সিস্টেমস অপারেটরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ব্যাংক, এমএফএস ও সকল ধরনের আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাহকসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আইসিটিসহ স্ব স্ব ক্রিটিক্যাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট এর ক্ষেত্রে কেইউওয়াই চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করবে এবং বিশেষ পরিস্থিতি সেবা চালু রাখার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিজনেস কমিউনিটি প্ল্যান (বিসিপি) প্রণয়ন করবে। সরকার ঘোষিত সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপকালীন ব্যাংক, পিএসপি, পিএসও এবং এমএফএস জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট প্রোভাইডারগণ স্ব স্ব সিস্টেম, ডিস্ট্রিবিউশন ও এজেন্ট চ্যানেল নিরবচ্ছিন্ন ও সচল রাখবে। এতে বলা হয়েছে ‘গ্রাহকগণের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের জন্য ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম, এজেন্ট ব্যাংকিং এর এজেন্ট পয়েন্ট এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) এর এজেন্ট পয়েন্টসমূহে নগদ অর্থ ও ই-মানি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) সরবরাহের সেবা নিরবচ্ছিন্নভাবে নিশ্চিত করবে এবং লেনদেনের স্থানসমূহ অর্থাৎ ব্যাংক, এটিএম, পিওিএস ও এজেন্ট পয়েন্টসমূহ নিয়মিতভাবে জীবাণুমুক্ত ও সেখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ব্যাংকগুলো তাদের এটিএম চ্যানেল সার্বক্ষণিক সচল রাখা এবং চাহিদা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটিএম মেশিনে ক্যাশ ফিডিং এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এটিএম এ টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমার ন্যূনতম পরিমাণ হবে ১ লাখ টাকা এবং উভয়ক্ষেত্রেই টাকা উত্তোলনের একক লেনদেনের ন্যূনতম পরিমাণ একই হবে। ‘২৪ ঘণ্টা (২৪/৭) গ্রাহক লেনদেন সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে অনলাইন ব্যাংকিং লেনদেন সেবা প্রদানকারী ব্যাংকসমূহ উক্ত সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখবে। সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন জনসাধারণকে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে লেনদেনে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে এনপিএসবি এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ফান্ড ট্রান্সফার (আইবিএফটি) লেনদেনের ঊর্ধ্বসীমা নিম্নোক্তভাবে পুনঃনির্ধারণ করা হলো- ব্যক্তিক লেনদেন দৈনিক সর্বোচ্চ ১০টি করা যাবে। ব্যক্তিক লেনদেন দৈনিক সর্বোচ্চ সীমা ১০ লাখ টাকা, একক লেনদেন সর্বোচ্চ সীমা ৩ লাখ টাকা। প্রাতিষ্ঠানি দৈনিক সর্বোচ্চ ২০টি লেনদেন করা যাবে। ক্ষেত্রে লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা ২৫ লাখ, প্রাতিষ্ঠানিক একক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা ৫ লাখ টাকা। ইন্টারনেট ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে ২ ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (২এফএ) নিশ্চিত করতে হবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) এর মাধ্যমে লেনদেনের সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো। তবে কাস্টমস শুল্ক-করাদি, ফি, চার্জ প্রভৃতি পরিশোধ ও আন্তঃব্যাংক লেনদেন আরটিজিএস এর মাধ্যমে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পরিশোধ করা যাবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সকল ব্যাংক, এমএফএস, পিএসপি এবং পিএসও সমূহ স্ব স্ব সিস্টেম অবকাঠামোর উপর সতর্ক নজরদারি রাখবে এবং সিস্টেম ও ডেটাবেইজে সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য ই-মেইল, ফিশিং ই-মেইল, র্যানসামওয়্যার আক্রমণ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ নজরদারি পরিচালনা করবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে লেনদেন সংক্রান্ত প্রতারণা ও সোস্যাল মিডিয়া, ই-মেইল, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভিত্তিক আর্থিক প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক করবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী সকল অবকাঠামো যথারীতি চালু রাখতে হবে এবং এ সংক্রান্ত নিরাপত্তা ও সাইবার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত উপর্যুক্ত নির্দেশনাসমূহ বলবৎ থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন