শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনোদন প্রতিদিন

গণমানুষের প্রিয় ইত্যাদি এবার রাঙ্গামাটিতে : প্রচার হবে ৩০ সেপ্টেম্বর

প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিনোদন ডেস্ক : আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলোতে গিয়ে ‘ইত্যাদি’র মূল অনুষ্ঠান ধারণ করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ‘ইত্যাদি’র এই দেশ পরিক্রমার ধারাবাহিকতায় আগামী পর্ব ধারণ করা হয়েছে পার্বত্য জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত রাঙ্গামাটিতে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বিজিবি সেক্টর হেড কোয়ার্টারের অভ্যন্তরে লেক, সবুজ বনানী-পাহাড় আর অসাধারণ নৈসর্গিক দৃশ্য পরিবেষ্টিত সুউচ্চ হেলিপ্যাডে ধারণ করা হয় এবারের ‘ইত্যাদি’। পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার জেলা এই রাঙ্গামাটি। বাংলাদেশের যখন যে স্থানে ‘ইত্যাদি’ ধারণ করা হয় সেই স্থানটির বৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করেই সেট নির্মাণ করা হয়। ফলে দর্শকরা যেমন ঐ স্থানটি সম্পর্কে জানতে পারেন, তেমনি নিত্য-নতুন লোকেশনের কারণে প্রতিবারই সেট নির্মাণেও বৈচিত্র্য আসে। টেলিভিশন অনুষ্ঠানকে স্টুডিওর চারদেয়ালের ভিতর থেকে বাইরে এনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে অনুষ্ঠান করার এই ধারণাটি এখন অনেকেই গ্রহণ করেছেন। ফলে টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণেও বৈচিত্র্য এসেছে। রাঙ্গামাটির ঐতিহ্যের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে নির্মাণ করা আলোকিত মঞ্চের সামনে হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে এবার ধারণ করা হয় গণমানুষের অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। সব সময় রাতের আলোকিত মঞ্চে ‘ইত্যাদি’ ধারণ করা হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাঙ্গামাটির এই প্রাকৃতিক রূপ রাতের বেলায় দেখানো সম্ভব নয় বলে এবার দিনের আলো থাকতেই ‘ইত্যাদি’র ধারণ শুরু হয়। ‘ইত্যাদি’র ধারণ উপলক্ষে পাহাড় কন্যা রাঙ্গামাটিতে ছিল উৎসবের আমেজ। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে বিজিবি’র তত্ত¡াবধানে আমন্ত্রিত অতিথিরা একে একে প্রবেশ করেন অনুষ্ঠানস্থলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল। আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও হাজার হাজার মানুষ ভ্যাপসা গরমের মধ্যেও আশেপাশের পাহাড়, গাছ ও লেকের পাড়ে দাঁড়িয়ে ‘ইত্যাদি’র ধারণ উপভোগ করেন। ‘ইত্যাদি’র এই ধারণ অনুষ্ঠান চলে বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। শেকড় সন্ধানী ইত্যাদিতে সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচার বিমুখ, জনকল্যাণে নিয়োজিত মানুষদের খুঁজে এনে তাদের বিভিন্ন কর্মকাÐ তুলে ধরা হয়। যাতে তাদের এসব কাজ দেখে অন্যেরাও অনুপ্রাণিত হতে পারেন। এবারের পর্বে রয়েছে ফেসবুক এর ভিন্নতর ব্যবহারের মাধ্যমে অসহায় মানুষকে সেবা দিতে এগিয়ে আসা সিরাজগঞ্জের এক যুবক মামুন বিশ্বাসের উপর একটি প্রতিবেদন। রয়েছে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনাচার এবং রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমÐিত, দর্শনীয় ও পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানগুলোর উপর তথ্য ভিত্তিক প্রতিবেদন। আসলে রাঙ্গামাটিতে এমন এমন দুর্গম অঞ্চলও রয়েছে যেখানে টিভি অনুষ্ঠান নির্মাণতো দূরের কথা-কোন টিভি ক্যামেরাও কখনও পৌঁছেনি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সহযোগিতায় সেসব স্থানে গিয়েও অনেক চিত্র ধারণ করা হয়েছে। এবারের বিদেশী প্রতিবেদন করা হয়েছে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাঁধ ও বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্প নেদারল্যান্ডস্ এর ডেল্টা ওয়ার্কসের উপর। এবারের ইত্যাদিতে মূল গান রয়েছে একটি। উল্লেখ্য ইত্যাদিতে সবসময় ভিন্ন আঙ্গিকে বিষয় ভিত্তিক গান প্রচার করার চেষ্টা করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের ইত্যাদিতে দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ বৈচিত্র্য, আর রাঙ্গামাটির চোখ জুড়ানো রঙ নিয়ে একটি বহুশ্রæত জনপ্রিয় গান গেয়েছেন চট্টগ্রামের জনপ্রিয় শিল্পী রবি চৌধুরী এবং রাঙ্গামাটির চমচমি দেওয়ান। সাথে ছিল স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। এছাড়াও এবারের অনুষ্ঠানে রয়েছে একটি ব্যতিক্রমী নাচ। যাতে অংশগ্রহণ করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন পাহাড়ী সম্প্রদায় এবং বাঙালী নৃত্যশিল্পীরা। এই নাচটিতে অংশগ্রহণ করেছেন প্রায় শতাধিক স্থানীয় নৃত্যশিল্পী। নাচটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত¡াবধানে পরিচালিত চারিদিকে লেক পরিবেষ্টিত অসাধারণ সুন্দর লোকেশান আরন্যক রিসোর্টে এবং অংশবিশেষ মঞ্চে দর্শকদের সামনে ধারণ করা হয়। দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী যেই স্থানে ইত্যাদি ধারণ করা হয় সেই স্থানকে ঘিরে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় এবং সঠিক উত্তর দাতাদের দিয়ে করা হয় ২য় পর্ব। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাঙ্গামাটিকে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে হাজার হাজার দর্শকের মাঝখান থেকে ৪ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন বিলুপ্তপ্রায় বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পরিচিতি ও স্থানীয় গানের মিউজিক শুনে সেই গান পরিবেশনের মাধ্যমে ২য় পর্বে বিজয়ী নির্বাচন করা হয়। যা ছিল বেশ উপভোগ্য। নিয়মিত পর্ব হিসেবে এবারও রয়েছে যথারীতি মামা-ভাগ্নে, নানী-নাতি ও চিঠিপত্র বিভাগ। রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষè নাট্যাংশ। নতুন ভাবনার প্রকাশক, বিয়ের দাওয়াতে প্রযুক্তি, আদব-কায়দার একাল সেকাল, বিজ্ঞাপন বিরতির যন্ত্রণা, আবাসন ব্যবসার ভবিষ্যৎ রূপ, ফেসবুক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, তিরস্কারকে পুরস্কার ভাবাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। সব শ্রেণী পেশার মানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র আগামী পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে-এ প্রচার হবে ৩০ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার রাত ৮ টার বাংলা সংবাদের পর। ‘ইত্যাদি’র রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মান করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ‘ইত্যাদি’ স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কস্মেটিকস্ লিমিটেড।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন