যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট তার সর্বশেষ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বৈষম্য ও রক্ষণশীলতার বার্তা দিয়েছেন। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ভোটিং রাইটস অ্যাক্টের ২০১৩ সালের সিদ্ধান্তকে সমুন্নত রেখে বৈষম্যমূলক আইনগুলোর প্রসার ঘটিয়েছে। গেল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট অশ্বেতাঙ্গ ভোটারদের ওপর এসব আইন কঠোরভাবে আরোপের জন্য নতুন নির্দেশিকা প্রদান করেছে এবং এ সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের রক্ষণশীলতা ও বৈষম্যমূলক অবস্থানের বার্তাটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট রিপাবলিকান সমর্থিত আরিজোনা ভোটদান সংক্রান্ত দু’টি নিষেধাজ্ঞাকে বহাল রেখেছে। ডেমোক্র্যাটরা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, সংখ্যালঘু ভোটারদের জন্য বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণভাবে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আইন বিভাগের অধ্যাপক ডিউক মেরিন কে লেভি বলেছেন, ‘অ্যারিজোনায় ভোটাভুটি নিষেধাজ্ঞাকে বহাল রেখে বৃহস্পতিবার জারি করা সিদ্ধান্তটি কীভাবে এ আইনকে মনে করা হবে তা সমূলে পরিবর্তিত করে দিয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ভোটিং রাইটস অ্যাক্টিভিস্টরা যুক্তি দিয়েছেন যে, মার্কিন ভোটদান আইনের ধারা-২ রক্ষার মাধ্যমে মূলত সুপ্রিম কোর্টের রক্ষণশীল-সংখ্যাগরিষ্ঠরা জর্জিয়ার রিপাবলিকান আইন প্রণেতাদের দ্বারা ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরোধী ভোটারদের দমনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনামূলকভাবে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সিস্টেম জালিয়াতির ফলে ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচন হেরেছেন বলে এই ভিত্তিহীন অভিযোগকে সত্যতা দিতে তারা এটি করেছেন বলে বলছেন আইন বিশেসজ্ঞরা।
২০১৬ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনের আগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা প্রথম অ্যারিজোনা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছিল যখন রাজ্যের রিাপবলিকার-নিয়ন্ত্রিত আইনসভা ‘ব্যালট সংগ্রহ’ নামে পরিচিত একটি অনুশীলন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, যা কার্যকরভাবে বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যালট সরবরাহের আইনী কর্তৃত্বে তৃতীয় পক্ষকে অনুমতি দেয়। দ্বিতীয় আইনি নিষেধাজ্ঞাটি ‘অস্থায়ী ব্যালট’ নামে পরিচিত, যা ২০১৬ সালে পূর্বের রিপাবলিকান অধ্যুষিত অ্যারিজোনার আইনসভা যে কোনও নির্বাচনে আংশিক বা পুরোপুরি গণনা করা নিষিদ্ধ করেছিল।
সুপ্রিম কোর্ট এই আইনের ধারা-২ তে বিশেষভাবে ‘কোনও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বর্ণ, জাত বা সদস্যতার কারণে কোনও নাগরিকের ভোট দেওয়ার অধিকারকে অস্বীকার বা ক্ষুদ্রতর করার ফলস্বরূপ’ ভোটের মান, অনুশীলন, বা পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছে।’
এ প্রসঙ্গে মার্কিন বিচারপতি এলেনা কাগান লিখেছেন যে, রায়টি ‘মর্মান্তিক’ কারণ আমেরিকা’র মহত্বের স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে দাঁড়ানো এমন একটি আইনকে দুর্বল করার জন্য আদালত পুনরায় লিখেছেন। দুঃখজনক বিষয় হ’ল আদালত ভোটদানের ক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসান ঘটাতে এমন একটি আইনকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন। সূত্র : সিএসএস, এনবিসি, দ্য নিউ উইয়র্ক টাইম্স. স্যালন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন