বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণের রাশ টানতে চলমান লকডাউনের মধ্যে সরকার অনুমোদিত স্থলবন্দর ব্যবহার করে সপ্তাহে তিন দিন ভারত থেকে ৬টি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা যাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই দিনগুলো হচ্ছে রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার। আর প্রবেশ করবেন বেনাপোল, আখাউড়া, বুড়িমারী, হিলি, দর্শনা ও সোনা মসজিদ বন্দর দিয়ে। গতকাল রোববার করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে। আবার বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গু রোগের পাদুর্ভাব ঘটেছে।
অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বহু সংখ্যক নাগরিক চিকিৎসা ও অন্যান্য কারণে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করে থাকেন। সরকারের যেগুলো নিয়ম-কানুন আছে সেগুলো প্রতিপালন করে তারা অনেকেই স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। কলকাতায় আমাদের যে উপহাইকমিশন আছে সেখান থেকে একটি সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানরত নাগরিকরা অনুমোদিত স্থলবন্দর বেনাপোল, আখাউড়া, বুড়িমারী, হিলি, দর্শনা ও সোনা মসজিদ বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত সপ্তাহে তিন দিন রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার স্থলবন্দর ব্যবহার করে দেশে আসা যাবে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, গত সাত দিনের করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি প্রায় কাছাকাছি। সংক্রমণ পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। তিনি আরো বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার যখন যেখানে ব্যবহার হয় সেটা আবার রিফিল করার জন্য চলে যায়। সংখ্যাতে সেটা রিজার্ভ হিসেবে জমা থাকে। যখন যেখানে প্রয়োজন সেটি দ্রুত সরবরাহ করা হয়। যে কারণে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা মাঝে মাঝে বেড়ে যায়-কমে যায়। তবে বাস্তাবেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা বেড়েছে, তার কারণ চাহিদাও বেড়েছে। তিনি বলেন, অক্সিজেনের অভাবে কিছু রোগীর মৃত্যু অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ তদন্ত করার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এলে এ বিষয়ে বলা যাবে। তবে অক্সিজেনের সামগ্রিক সরবরাহের কোনো সংকট নেই। উৎপাদনেরও এই মুহূর্তে কোনো সংকট নেই। উৎপাদনকারকদের সঙ্গে আমরা প্রতিদিন বৈঠক করছি এবং আমাদের চাহিদা জানিয়ে দিচ্ছি।
টিকা নিতে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়ছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। সেই তালিকা আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি যেন তারা নিবন্ধন করতে পারেন। পর্যায়ক্রমে সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ক্ষেত্রে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।
ডা. নাজমুল বলেন, বর্ষাকাল চলে এসেছে, প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩০ জন এবং গতকাল পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৬৩ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৪৩৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কারও যদি জ্বর থাকে তাহলে কোভিড পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গুর পরীক্ষা করাতে হবে। সারা দেশে সিভিল সার্জনদের কাছে পর্যাপ্ত এনএস-১ কিট সরবরাহ করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পরীক্ষা করানো সম্ভব হবে। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন