মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখে। পৃথিবীর সকল সফল মানুষের স্বপ্ন অন্য মানুষের চেয়ে ছিল অনেক ধাপ এগিয়ে। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য তারা কাজ করেছেন নিরলসভাবে। তাদের নিরলস পরিশ্রমও চেষ্টায় সব বাধা পেরিয়ে পৌঁছেছেন সফলতার শীর্ষে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন মোঃ মাহাদি হাসান । তিনি বিশ্ববিবিদ্যালয়ের কারও বড় ভাই, কারও ভালো বন্ধু আবার কারও প্রিয় শিক্ষার্থী। বাড়ি কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলায়। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। বাবা গ্রামের একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। মা হোম মেকার। প্রাইমরি স্কুলে পেয়েছিলেন বৃত্তি। স্কুল-কলেজের পড়াশুনা সম্পন্ন করেছেন মফস্বলে। এইচএসসি পরীক্ষার পাস করার পর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন। চান্স ও পেয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম সাড়ির কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু তিনি নানা স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হন নিজের জেলা শহরের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। ২০০৭ সালেই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিবিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরুতে নানা সংকট, বাধা থাকে এটা স্বাভাবিক। তিনি সকল বাধা পেরিয়ে এখন মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করছেন।
মাহদি স্বপ্ন দেখেন পিএইচডি করার। শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে দেশের শিক্ষাঙ্গনে অবদান রাখার, দেশের সেবা করার। মাহাদি বলেন ‘এ শ্রেষ্ঠ মানুষগুলো আমার ভেতরের সুপ্ত সাহসিকতাকে আরো বেগবান করেন। আমি ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেই শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে আমি আমার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাত্তয়ার। বাংলাদেশ আমার অহংকার।’
পরে গবেষণার পিএইচডির স্কলারশীপ নিয়ে পাড়ি জমান মালয়েশিয়া। ভর্তি হন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইউনিভার্সিটি কুয়ালালামপুর (আই ইউ কে এল)/ ওহভৎধংঃৎঁপঃঁৎব টহরাবৎংরঃু কঁধষধ খঁসঢ়ঁৎ (ওটকখ) বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউ মিডিয়া এন্ড ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ লার্নিং/ ঘবি গবফরধ ধহফ ঊহমষরংয খধহমঁধমব খবধৎহরহম বিষয়ে পিএইচডি গবেষণার জন্য। একজন ফুলটাইম গবেষক হিসেবে নিজের পিএইচডি গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মাহাদি। কিছুদিন আগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। মাহাদি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিসীমায় শিক্ষকতার একটা বিশেষ সুবিধা হলো সারা বিশ্বকে জানা এবং নিজের দেশকে উপস্থাপন করার সুযোগ পাওয়া।
বাবা বলতেন শিক্ষার জন্য যা ব্যয় হয় তা ব্যয় নয় বরং বিনিয়োগ। আমাকে বলেন ‘মাহাদি আমার সবচেয়ে বড় ব্যাংক ব্যালেন্স।’
শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি যাতে আধুনিক পদ্ধতির সমন্বয়ে পাঠদান করে জাতি বিনির্মাণে বেশি অবদান রাখতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু পাঠ্যপুস্তক আর সিজিপিএ নির্ভর পড়াশোনা না করে, জানার জন্য পড়ার প্রয়োজন বেশি। চাকরির পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো মানুষ হওয়ার জন্য পড়তে হবে। সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার সময় যেন নিজেকে বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার যোগ্যতা থেকে।
ষ এস এম জুবায়ের
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন