নমুনা জট সৃষ্টি হয়েছে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে। দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার সংগৃহীত নমুনা দিনাজপুরের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমান চালু একটি পিসিআর মেশিনে দুই সাইক্লিনে (দুই দফায়) মাত্র ১৮৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হওয়ার কারণে নমুনা জোটের সৃষ্টি হয়েছে। এক মাস আগেই আরো একটি মেশিন আসলেও বায়োসেফটি ক্যাবিনেটের জন্য তা চালূ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে প্রায় সোয়া তিন হাজার নমুনা জমা হয়ে পড়ে আছে। সংক্রমন ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে করোনা পরীক্ষার আগ্রহ বেড়ে গেছে। প্রতিদিন শত শত নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফলে নমুনার ফলাফল ৮ থেকে ১০ দিনেও দেয়া সম্ভব হচ্ছে। আর রেজাল্ট না পেয়ে অনেকেই একবারের জায়গায় তিন বার নমুনা দিয়ে রেজাল্ট নেয়ার চেষ্টা করছে। উল্লেখ থাকে যে, দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড়সহ সীমান্তবর্তী জেলা ও উপজেলাগুলিতে জ্বর,সর্দি কাশি এখন ঘরে ঘরে। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে এন্টিবায়েটিকসহ জ্বর সর্দির ঔষধ সেবন করছে। এর মধ্যে অনেকেই শ্বাস কষ্টের শেষ পর্যায়ে হাসপাতালমুখী হলেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। অতি বৃদ্ধদের অনেকেই বাড়ীতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। বিষয়টি প্রশাসনসহ সকল মহলের নজরে আছে। কিন্তু সামাজিক অবস্থানের কারনে বৃদ্ধা বা বৃদ্ধারা হাসপাতালমুখি হচেছ না।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে হাসপাতালের একটি সুত্র জানিয়েছে, নমুনার অনুপাতে দুই সাইক্লিনে পরীক্ষা করে ২৫ শতাংশ নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের মতে দিনাজপুরসহ অন্যান তিনটি জেলা ও উপজেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮’শ নমুনা আসছে পরীক্ষার জন্য। কিন্তু ১৮৮ টি পরীক্ষা সক্ষমতা থাকায় শেষ পর্যন্ত স্থানীয় কর্মকর্তা -কর্মচারী ও টেকনিশিয়ানরা দিন-রাতে তিন সাইক্লিনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিন সাইক্লিনে সর্বোচ্চ ২৭৭ টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও বিপুল সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার দীর্ঘদিন পড়ে থাকা এবং সংগ্রহ ঠিকমত না হওয়ায় অনেক নমুনাই পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে নমুনা দেয়ার সপ্তাহ পার হলেও রেজাল্ট না পাওয়ায় এক বারের জায়গায় দুই বার নমুনা দিয়ে রেজাল্ট নেয়ার চেষ্টা করছে। আবার অনেক নমুনায় নেগেটিভ রেজাল্ট আসলেও বাজ্যিকভাবে উপসর্গে ডাক্তাররা বলছে করোনার কথা। এক্ষেত্রে যে কোন কারনে পরীক্ষায় ভুল রেজাল্ট আসার কথা বলে করোনা’র চিকিৎসা দিচ্ছে ডাক্তারেরা।
দীর্ঘ এক মাস আগে এই হাসপাতালে আরো একটি পিসিআর ল্যাব মেশিন দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু মেশিনটি বসানোর জন্য বায়োসেফটি কেবিনেট না থাকায় সেটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে। তবে আজ-কালের মধ্যে কেবিনেটটি চলে আসবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন। উল্লেখ্য গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর মেশিনে ৫৪৭৫৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। তবে অন্যান্য জেলার নমুনাসহ পরীক্ষার সংখ্যা ৬৮ হাজারের বেশী হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন