মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বিশ্বনাথে ৬বছর ধরে গৃহবন্দি বিবস্ত্র যুবক

বিশ্বনাথ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০২১, ৪:০৪ পিএম

নাম তার অর্জুন দাস বেনু (৩২)। বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নে। সে স্বর্গীয় রানু দাস’র পুত্র। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে চার দেয়ালের ভেতরেই থমকে আছে বস্ত্রহীন এই যুবকের জীবন। সে বাহিরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ঘরের জানালা দিয়ে দেয়া হয় খাবার ও স্লানের জল। টয়লেটও করতে হয় ঘরের ভিতরেই। যেনুকে বাহির থেকে বন্ধ ঘরের একটি খালি কাঠের চৌকিতে বিবস্ত্র অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখা যায়। জানালা দিয়ে ডাক দিলে উঠে বসে সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের মতোই কথা বলেন।

মানসিক প্রতিবন্ধী বিবস্ত্রহীন এই যুবকের খবর শুনে তাকে দেখতে এবং তার চিকিৎসা নিতে তার বাড়িতে ছুটে যান বিশ^নাথ পৌর প্রশাসক ও ইউএনও সুমন চন্দ্র দাস। এ অবস্থা কেন? জানতে চাইলে নির্বাক হয়ে চেয়ে রয় বেনু। এক পর্যায়ে বেনু ধন্যবাদ জানান ইউএনওকে। অর্জুন দাস বেনু’র চিকিৎসার আর্থিক সহায়তার আশ্বাসে এলাকার সাধারণ মানুষ ইউএনও’র এমন মানবিক উদ্যোগ খুশি হয়ে ইউএনওকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বেনু’র বড়ভাই ঝুনু দাস জানান, বেনু খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। এসএসসি পরিক্ষার ফলাফল খারাফ হওয়ার পর অর্থাভাবে পড়া-লেখা বাদ দিয়ে স্থানীয় বাজারে বেশ কিছুদিন ব্যবসায় করেন। ২০০৬ সালে হঠাৎ করে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তার। এক পর্যায়ে ২০১৬ সালে পেটের পীড়া দেখা দিলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে তার লিভার অপারেশন করা হয়। অবস্থা জটিল হওয়ায় তিন মাস হাসপাতালেই কাটাতে হয়। এক মাস রাখা হয় আইসিউতে। অবশেষে বাড়িতে নিয়ে আসার তিন মাস পরে ক্ষতস্থান শুকায় তার। এতে ৫-৬ লক্ষ টাকা খরচ হয় তাদের। অভাবের সংসারে জায়গা বিক্রি ও ধার-দেনা করে এ টাকা ব্যয় করেন তার বাবা। তিনি আরো জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে এমনটি হয়েছে বেনুর। নিয়মিত ঔষধ দিতে না পারায় সে আরও অস্বাভাবিক আরচণ, গালমন্দ ও যাকে-তাকে মারতে শুরু করায় আমরা নিরুপায় হয়ে ঘরবন্দী করে রেখেছি। ভালো চিকিৎসা ও নিয়মিত ঔষধ দিতে পারলে হয়তো আগের মতো স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারে সে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন