দুর্ভোগ আর বিড়ম্বনাকে সঙ্গী করে চট্টগ্রাম থেকে ঘরে ফিরছে মানুষ। পবিত্র ঈদুল আযহার উৎসবে সামিল হতে আপন ঠিকানায় ছুটছেন অনেকে। তবে বাস, ট্রেনে টিকিট নেই। টিকিট মিললেও গলাকাটা দাম। বাধ্য হয়ে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ মালবোঝাই গাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা। ঈদ যাত্রায় উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই আপন ঠিকানায় ছুটছে লাখো মানুষ।
ঈদুল আযহার বাকি আর মাত্র একদিন। কাল থেকে শুরু সরকারি ছুটি। তার আগেই গার্মেন্টসসহ কল-কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঈদের পর কঠোর লকডাউনে বন্ধ থাকবে কল-কারখানা। ফলে এবার ব্যাপকহারে শ্রমিকরা বাড়ি যাচ্ছেন। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতও বন্ধ থাকবে লকডাউনে। এ সুযোগে অনেকে গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছেন। সংক্রমণ এড়াতে লোকজনকে ভ্রমণের ব্যাপারে অনুৎসাহিত করা হলেও তা মানছেন না অনেকে। নগরী ছাড়ছে লাখ লাখ মানুষ। ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে কোলাহলমুখর বন্দরনগরী।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রেন, বাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। এমনিতেই চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার বাস সঙ্কট। তার উপর অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করায় সঙ্কট আরও বেড়েছে। এ সুযোগে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে দূরপাল্লার বাস সার্ভিসগুলো। সরকার নির্ধারিত ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার বদলে কয়েকগুণ বেশি ভাড়ায় মিলছে টিকিট। বাস এবং ট্রেনের টিকিট পাওয়াই এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে টিকিটি প্রত্যাশী যাত্রীদের ভিড় লেগেই আছে।
চট্টগ্রাম থেকে মোট ১২টি ট্রেন চলাচল করছে। এর মধ্যে ৮টি আন্তঃনগর ও ৪টি মেইল ট্রেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাশের আসন ফাঁকা রেখে প্রতি আসনে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ট্রেনে কিছুটা কড়াকড়ি থাকলেও দূরপাল্লার বাসে নিয়মের কোন বালাই নেই। বাসভর্তি যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে, ভাড়াও নেয়া হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। বাসে টিকিট না পেয়ে নিম্ন আয়ের এবং শ্রমজীবী মানুষ মালবাহী গাড়িতে গ্রামে ফিরছে। গতকাল নগরীর সিটি গেইট এলাকায় ট্রাক, পিকআপ এমনকি কাভার্ড ভ্যানেও দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম থেকে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর এলাকার বিভিন্ন রুটের পর্যাপ্ত বাস রয়েছে। তবে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করায় যাত্রীর চাপ বেড়েছে। বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর ও ফরিদপুর অঞ্চলে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা অনেক কম। তবে এসব এলাকায় যাত্রী বেশি হওয়ায় টিকিট মিলছে না। পরিবহন সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, এমনিতে বাস কম তার উপর অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করায় সঙ্কট আরও বেড়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান, কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম এবং খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটিসহ উত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটেও ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে। এসব রুটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং গাদাগাদি করে যাত্রী বহনের অভিযোগ রয়েছে। সড়ক-মহাসড়কের বেহাল অবস্থা হওয়ায় যানজট হচ্ছে। এতে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন