বরগুনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের চারপাশে ডোবা নালাগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে ময়লা আর কচুরিপানার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বেড়ে গেছে মশা মাছির উৎপাত। ইউএনও অফিস এলাকা এত অপরিচ্ছন্ন দেখে অনেকেই হতভম্ব হচ্ছেন। ময়লার ভাগাড়ে বংশবৃদ্ধি করা মশার কামড় থেকে ডেঙ্গুর আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
জানা গেছে, আমতলী ইউএনও অফিসের চারদিকে উপজেলা প্রতিষ্ঠার পর সড়ক ও পরিষদের নিচু জমি ভরাট করার জন্য চারপাশ থেকে মাটি কাটায় ডোবা নালার সৃষ্টি হয়। পরিষদ কমপ্লেক্সে ভবনের পূর্বদিকে জেলা পরিষদের সড়ক। তার পাশেই রয়েছে বিশাল আকারের ডোবা। ডোবা ময়লা আর শেওলায় পরিপূর্ণ। ভবনের পেছনে উত্তর পাশে লম্বা নালা কঁচুরিপানায় পরিপূর্ণ। পশ্চিম পাশে পুকুর এবং নালা ময়লা আর আবর্জনায় পরিপূর্ণ। দক্ষিণ পাশে সমাজ সেবা অফিস এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস, পশ্চিম পাশে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য দুটি কোয়ার্টার ও খাদ্যগুদাম ভবন এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং মৎস্য অফিস।
এর মাঝখানে রয়েছে বিশাল আকারের এক ডোবা। ডোবাটি কয়েক বছর ধরে কঁচুরিপানায় পরিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
এটা দেখলে মনে হয় এখানে মশা উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। এর আশপাশে মশার উৎপাতে দিনের বেলায়ও দাঁড়ানো যায় না। ডোবার পাশে অবস্থিত উপজেলা মৎস্য অফিস। এই অফিসের ক্ষেত্র সহকারী জগদিশ কুমার বসু জানান, মশার উৎপাতে দিনের বেলায়ও অফিস করা যায় না। তিনি আরো বলেন, যেভাবে মশার উৎপাত বাড়ছে তাতে ডেঙ্গুর আশঙ্কা রয়েছে। সরকারি কোয়ার্টারে বসবাসরত মো. শাহজাহান জানান, দিনে রাতে সমানভাবে মশার উৎপাত। রাতের বেলায় মশারি টানিয়েও মশার জ্বালায় ঠিক মত ঘুমানো যায় না।
ইউএনও অফিসের পশ্চিম পাশে রয়েছে একটি মিনি ডাকবাংলো। এর সামনে এবং কলেজ সড়কের পিছনে স্থানীয় দোকানপাটের ময়লা ফালানোর কারণে নালার মাথা ভরে গেছে আবর্জনায়। এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে অহরহ। পরিষদ ভবনের পূর্ব পাশের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। ইউএনও অফিস কার্যালয়ের মাত্র ৫০-৬০ ফুট দূরত্বে এখানে নালার উপর জেলা পরিষদের জায়গায় দোকান এবং আইনজীবীদের ঘরের খোলা টয়লেটের মল মূত্র পানির সঙ্গে মিশে প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। চলছে বর্ষা মৌসুম। মৌসুমের শুরুতেই এসকল ডোবা নালায় পানি জমে শেওলা আর কঁচুরিপানায় ভরে গেছে। আগে এগুলো নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হলেও বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা। ইউএনও অফিসে আসা হলদিয়ার বাসিন্দা মো. কুদ্দুস মোল্লা জানান, ইউএনও অফিসের গেট দিয়ে ঢুকতেই ডান এবং বাম পাশে ময়লার ভাগাড়। মশার কামড়ে দিনের বেলায়ও পরিষদের ভেতরে দাঁড়ানো যায় না। অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল করিম জানান, মশার উৎপাতে দিনে রাতে চেম্বারে বসা যায় না।
গত বছর বর্ষা মৌসুমে এডিশ মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আছমা বেগমের মৃত্যু এবং আরো কয়েকজন আক্রান্তের পর উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান জোরদার এবং ওষুধ ছিটানো হলেও এ বছর এখনো এ রকম কোন কর্মসূচি চোখে পড়েনি। ফলে পৌর শহরের সচেতন বাসিন্দারা মশার কামড় থেকে ডেঙ্গুর আশঙ্কা করছেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, উপজেলা পরিষদের মধ্যে অবস্থিত ডোবা নালাগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব আমার নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন