শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগের পর অবশেষে আশুলিয়ার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের খানা-খন্দ সংস্কার করা হয়েছে। এতে করে শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি লাঘব হয়েছে। জামগড়া থেকে বাইপাইল পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা-খন্দে ভরা ছিল। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ত।
মহাসড়কের বেহাল দশা নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করে। সড়ক সংস্কারের ফলে এখন আর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষকে।
সরেজমিনে গতকাল আশুলিয়ার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় গর্ত হয়ে পানি জমে থাকা স্থানগুলো ইট বিছিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। সড়কে এখন আর নেই খানা খন্দ। কোথাও পানি জমে নেই। কোন যানজটও লক্ষ্য করা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই চলছে যানবাহন।
জামগড়া এলাকার রিকশা চালক আবুল কালাম বলেন, ভাঙা রাস্তা দিয়ে রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হতো। এখন আর সেই কষ্ট নেই। ইট বিছিয়ে ভাঙা সড়ক সংস্কারের কারণে এখন সড়কে কোন যানজটও নেই।
স্থানীয় পোশাক শ্রমিক এনামুল হক বলেন, দীর্ঘদিন খুব কষ্ট করে ময়লা-আর্বজনায় ভরা হাঁটু পানি পেরিয়ে কর্মস্থলে যেতে হয়েছে। এখন সড়কটি সংস্কারের কারণে সেই কষ্ট লাঘব হয়েছে।
দেশের অন্যতম জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল। এখানে অনেক শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার কারণে অসংখ্য মানুষের বসবাস। কিন্তু এই শিল্পাঞ্চল এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কারণে চরম দুর্ভোগের শেষ ছিল না শিল্পকারখানার শ্রমিক থেকে শুরু করে এলাকার বাসিন্দাদের। সড়কের বেহাল দশার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল একাধিক কারখানা কর্তৃপক্ষকেও। ইট বিছিয়ে হলেও সড়কটি সংস্কার করায় আশুলিয়ার জামগড়া, ইউনিক, শিমুলতলা, জিরাবো, কাঠগড়াসহ বিভিন্ন স্থানে অল্প বৃষ্টিতে আর পানি জমে থাকবে না।
এদিকে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের স্ট্যাটিক লোড টেস্টের পাইলট পাইল বোরিং কাজের উদ্বোধন করতে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, বর্তমানে যেভাবে রাস্তা (ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক) আছে থাকুক, ভোগান্তি যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাস্তা যেন ব্যবহারের উপযোগী থাকে। এয়ারপোর্ট-আব্দুল্লাহপুর-ধউর-আশুলিয়া-জিরাবো-বাইপাইল হয়ে ঢাকা ইপিজেড পর্যন্ত ৪ লেন বিশিষ্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ শেষে হওয়ার পরে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।
ঢাকা জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. আব্দুস সালাম জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জামগড়া, শিমুলতলা, ইউনিক এলাকার সড়কে ভয়াবহ ভাঙনের কারণে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হতো সেটা এখন আর নেই। ইট বিছিয়ে সড়কের ভাঙা বড় বড় গর্ত সংস্কার করার কারণে এবং বৃষ্টি না হওয়ায় এখন আর পানি জমে থাকছে না। ফলে যানবাহন স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
তিনি আরও বলেন, সড়কটির উপর দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হবে, এজন্য স্থায়ীভাবে সংস্কার হচ্ছে না। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ শেষ হলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির স্থায়ী সংস্কার হবে। এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথের ঢাকা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামীম আল মামুনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন