ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় মাইগ্রেশনের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে ধস্তাধস্তি হয়। তখন ওই মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলরত বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীরা। এ ঘটনায় পুলিশসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীও আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশুলিয়ার নরসিংহপুরের সরকার মার্কেট এলাকার অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় পাশের ‘নাইটিংগেল মেডিক্যাল কলেজ’র শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তারা মাইগ্রেশনের দাবী জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। এরআগেও ক্যাম্পাসে অবস্থান ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে প্রশাসনের আশ্বাসে কর্মসূচী বাতিল করেন তারা। এরপরেও নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ মাইগ্রেশনের জন্য কোন ব্যবস্থা করেনি। পরে সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে সকল শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে পুলিশ পুলিশ এসে লাঠি চার্জ করলে আবু সায়েদ, লিজা, ফয়সাল ও শেফা ফেরদৌসী নামে চার শিক্ষার্থী আহত হয়।
শিক্ষার্থী ইমরান খান ইমনসহ অনেকেই জানান, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ মিথ্যা আশ্বাস ও আদালতের কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে আমাদের ভর্তি করায়। প্রথম বর্ষে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন এনে দেবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন এনে দিতে পারেননি। কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। মাইগ্রেশন না দিলে আমাদের ৪৫ জন শিক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানায় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী ইয়াহিয়া শুভ জানায়, এই মেডিক্যাল কলেজে আমরা ১৫ লাখ টাকা খরচ করে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু এখন আমরা আমাদের পরিবারের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। এই মেডিক্যালে কোনো রোগীই নেই। তারা ঠিক মতো শিক্ষার ব্যবস্থা না করেই শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রথম নয়। এর আগেও বিএমডিসির অনুমোদন না থাকা ও নানা অনিয়মের অভিযোগে ২০১৬ সালে প্রায় ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী মাইগ্রেশন করে অন্য মেডিক্যাল কলেজে চলে যায়। তখন এই মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে আদালতের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞার ওপর স্থগিতাদেশ নেয় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবারও শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে কলেজটি। ২০১৮ সালে ৪৫ জন শিক্ষার্থী এই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়।
নাইটিংগেল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল কবির রুমি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দাবি নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিঘ্রই বিষয়টি সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই ঘন্টারমত মহাসড়কে অবস্থান নেয়। মহাসড়কের উভয় পাশে অশংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে তারা ধস্তাধস্তি শুরু করে। এতে আমাদের এক নারী পুলিশ সদস্য আহত হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন