দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবার আশঙ্কা থেকেই ১৯৯৩ সালে সংসদের বিরোধী দলের নেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দূরদর্শী সভানেত্রী শেখ হাসিনার মস্তিস্কপ্রসূত দল-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয় এমন সরকারের যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা সেদিনের মত আজকেও দেশবাসী মর্মে মর্মে অনুধাবন করছেন। এজন্য রাজনীতি সচেতন মহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ইতিপূর্বের তিনটি সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার অনন্য দৃষ্টান্তের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। অপরদিকে পরবর্তীতে দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে সরকারী প্রভাবে নির্বাচন কমিশন আর পক্ষপাতদুষ্ট প্রশাসন সর্বস্তরেই জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। ভোটার বিহীন নির্বাচন, মধ্যরাতের ভোট, অর্ধেকেরও বেশী আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সাংসদ ইত্যাদি নমুনার মাধ্যমে প্রমাণিত সত্য। উল্লেখিত ঘটনাবলীর আলোকে নিশ্চিত করেই বলা যায় দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করলে তা হবে বিরোধী দলগুলোর জন্য সলিল সমাধি। আজ বাদ যোহর বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী, বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের সংসদ সদস্য কাজী আব্দুল কাদেরের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে পালন উপলক্ষ্যে দলীয় উদ্যোগে দলের নির্বাহী সভাপতি আবদুল আজিজ হাওলাদারের সভাপতিত্বে পল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় দলীয় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, দলীয় মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, মো. কুদরতউল্ল্যাহ ও অ্যাডভোকেট জসীমউদ্দিন, দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির চেয়ারম্যান আহছানউল্ল্যাহ শামীম, অতিরিক্ত মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান ও কাজী এ.এ কাফী ,কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আফতাব হোসেন মোল্লা, ডা. হাজেরা বেগম, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, এড. আবু সাঈদ মোল্লা, মো. আব্দুল খালেক, মো. ওয়াহিদুজ্জামান ওয়াহিদ, এস.এম আনিসুজ্জামান মানিক, মোঃ নূর আলম, আব্দুল আলিম প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় সকল মন্ত্রী উন্নয়নের গণতন্ত্রের কথা বলে দৃঢ়তার সাথে বারবার দাবী করছেন যে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে জনগণ তাদেরকেই নির্বাচিত করবেন। জনগণের প্রতি এমন অকম্পিত আস্থা পোষণকারী শেখ হাসিনার সরকার যদি গণদাবী উপেক্ষা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুন:প্রবর্তন করতে অসম্মত থাকেন তাহলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সততা ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে তাদের নৈতিকতা সম্পর্কে জনগণের আস্থাহীনতা দিনদিন বাড়তেই থাকবে। ফলশ্রুতিতে বিরোধী দলগুলোর এই যৌক্তিক এবং পরীক্ষিত দাবীটি আগামীতে গণআন্দোলনে রূপ নিতে পারে বলে মুসলিম লীগ মনে করছে। জনগণের জন্য সংবিধান, সংবিধানের জন্য জনগণ নয়, ক্ষমতাসীন দল যদি এই ধ্রুব সত্যে বিশ^াস করে তবে তাদেরকে সংবিধানের পাশাপাশি জনমতকেও গুরুত্ব দিতে হবে। তাই জনগণের প্রতি প্রশ্নাতীত আস্থা রেখে সংবিধান সংশোধন করে দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুন:প্রবর্তনের করা আওয়ামী লীগের জন্য সম্মানের, স্বস্তির এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে জনগণের হারিয়ে ফেলা বিশ^াস পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরী। সভা শেষে মরহুম কাজী কাদের সহ দলের মৃত সকল নেতা-কর্মীর রূহের মাগফিরাত ও সকলের শারীরিক সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন