যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে চেক জালিয়াতি করে আড়াই কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সরকারের ভ্যাট বাবদ শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ ১০ হাজার ৩৬ টাকার চেক ইস্যু করে। কিন্তু সেই চেকের বিপরীতে প্রতারক চক্র আড়াই কোটি টাকা ৯টি চেকের মাধ্যমে তুলে নিয়েছে। বিষয়টি গতকাল বোর্ডের হিসাব শাখা থেকে ধরা পড়লে তুলকালাম ঘটে যায়। এ ব্যাপারে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। গঠন করেছেন তদন্ত কমিটি।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের অডিট অফিসার আবদুস সালাম জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন মালামাল ক্রয় বাবদ সরকারের ভ্যাটের ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে দেখা যায় যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ৭টি ও শাহীলাল স্টোর নামে দুটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। গতকাল আমরা চেকের মুড়ি বইয়ের সাথে ব্যাংকের স্টেটমেন্ট মেলানোর সময় এই জালিয়াতি ধরা পড়ে। অথচ মুড়ি বাইয়ের চেকের অঙ্কের সাথে ইস্যুকৃত চেকের অঙ্কের মিল নেই। ধারণা করা হচ্ছে বোর্ডের কর্মচারিদের যোগসাজসে ভুয়া চেকের মাধ্যমে এই টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। শিক্ষাবোর্ডের সচিব এএমএইচ আলী রেজা জানান, কার্যাদেশ অনুযায়ী মালামাল ক্রয় করে থাকি। কিন্তু সোনালী ব্যাংক থেকে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আমাদের নথিতে কোন বিলভাউচার জমা নেই। ভেনার্স প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ইতিপূর্বে আমাদের কিছু মালামাল দিলেও শাহীলাল স্টোরের সাথে কোন লেনদেন হয়নি।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষাবোর্ড শাখার ব্যবস্থাপক এসএম শাহিদুর রেজা জানান, ভেনার্স প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ঢাকার ফকিরাপুল ঠিকানার চেক ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখার ক্লিয়ারিং চেকের মাধ্যমে এসব টাকা তুলে নেয়া হয়েছে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান জানান, এই জালিয়াতির সাথে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান সরাসরি জড়িত। আপনারা সিসি ক্যামেরা দেখেন, চেয়ারম্যান রাত পর্যন্ত ভেনার্স প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের মালিকের সাথে সবসময় বসে থাকেন।
এ ব্যাপারে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের চেক প্রিন্টিং করা। সেখানে হাতে লেখার সুযোগ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, জালিয়াতি করে ভুয়া চেকের মাধ্যমে এসব টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা থানায় জিডি করেছি। গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যর তদন্ত কমিটি। যার প্রধান কলেজ পরিদর্শন কেএম রব্বানি। কমিটির রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি, রোববার সব নথি তলব করা হবে। সরকারের টাকা আত্মসাতের সাথে যারাই জড়িত হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন