হাইকোর্ট জাফলংকে প্রতিবেশগত-সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করার পরও থেমে নেই ধংসযজ্ঞ। পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহারে হচ্ছে বালু উত্তোলন। ফলে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে প্রকৃতি কন্যা জাফলং।
নদী তীরবর্তী লোকালয়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। ঝুঁকির মুখে পড়ছে ডাউকী নদীর উপর নির্মিত সেতুর পিলার। ভাঙনের মুখে জাফলং চা বাগানও। চলমান অবস্থা ঠেকাতে প্রশানের নেই কার্যকর উদ্যোগ। বরং মাঝেমধ্যে অভিযান দিলেই বালুখেকো চক্র গা-ডাকা দেয়। তারপর ফিরে আসে প্রশাসন। এরপর যেই সেই ধ্বংসযজ্ঞে নেমে পড়ে বালুখেকোরা।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত প্রশাসনের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সম্মতিতেই অবৈধ বালু উত্তোলন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক চক্র। বাগবাটোয়ারার ভিত্তিতেই চলছে এ কার্যক্রম। কিন্তু মাঝে মাঝে বাগবাটায়োরায় গড়মিল হলে, চাপে রাখতে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে ‘আই ওয়াশ’ করা হয়। অভিযান মানেই বাগবাটোয়ার অংশ বাড়ানো ও সময় মতো পকেটে নেয়া। জাফলং পিইয়াইন নদীর বল্লাঘাট এলাকায় দেখা যায়, পিয়াইন-ডাউকি নদী থেকে বালু উত্তোলনে যন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। যন্ত্রের ব্যবহারে কালো ধোঁয়া বাতাস ভারি করছে। উত্তোলনকৃত বালু বল্লাঘাটের দিকে নৌকা ও বাল্কহেড দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। জিরো পয়েন্ট থেকে কয়েক’শ গজ দূরে সংগ্রাম টিলা বরাবর নদী থেকে শুরু করে ছলাখেল গ্রাম পর্যন্ত ছোট-বড় মেশিন দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। এছাড়া জাফলং বাজারের ডাউকী নদীর ওপর সেতুর নিচ থেকেও বালু তোলা হচ্ছে। সেতুর নিচ থেকে লিস্টার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে এখন সেতু কাঠামো।
একসময় সিলেটের জাফলং এলাকা থেকে বিভিন্ন ভারী যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনের ফলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেকারণে প্রকৃতি রক্ষা ও মানুষের ক্ষয়ক্ষতির বিষয় মাথায় রেখে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রæয়ারি জাফলংকে প্রতিবেশগত-সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি পরিমল দেব বলেন, দায়িত্ব নিয়ে এলাকায় নতুন এসেছি আমি। তারপরও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার চেষ্টা করছি। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান জানান, ইসি এলাকা ঘোষণার পর থেকে সকল কিছু বন্ধ। মাঝেমধ্যে কেউ বালু উত্তোলন করছে শুনলে আমরা অভিযানে নামি। এছাড়া সবসময় নজরদারি রাখছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন