শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বালাগাল উলা বিকামালিহি কাসাফাদ্দোজা বিজামালিহি

এ.কে.এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সম্মানিত চাচা হজরত আব্বাস (রা:) স্বীয় ভ্রাতা আবু লাহাবের মৃত্যুর পর একদিন তাকে স্বপ্নে দেখলেন যে, সে খুব কষ্টকর অবস্থায় আছে। তখন তিনি আবু লাহাবের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তখন আবু লাহাব বলল, তোমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর নিজের জন্য কল্যাণকর কিছুই দৃষ্টিগোচর হয়নি। তবে হ্যাঁ, প্রতি সোমবার এই শাহাদাত আঙুলী থেকে পানি চুষে পান করে থাকি, যার দ্বারা-ইশারা করে আমি ক্রীতদাসী মত্তবিয়াকে আযাদ ও মুক্ত করে দিয়েছিলাম। সে যখন আমার ভ্রাতুস্পুত্র মোহাম্মদ (সা.)-এর জন্মলাভের সুসংবাদ আমাকে দিয়েছিল, তখন আমি আনন্দে-উদ্বেলিত হয়ে তাকে আমার এই আঙুলির ইশারা করে আযাদ করে দিয়েছিলাম। এরই বিনিময়ে আমি আজ এটুকু নেয়ামত লাভ করছি।

এই হলো সেই আবু লাহাব, যে পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরম দুশমান ছিল। যার প্রতি আল্লাহপাক ক্রোধান্বিত ছিলেন। যাকে অভিসম্পাত করে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আল কোরআনের সুরা লাহাব নাজিল করেছেন। যে কুফুরির হালতে মৃত্যুবরণ করে জাহান্নামি-সাব্যস্ত হয়েছে। এতদসত্ত্বেও প্রতি সোমবার তার কবর আজাব কিছুটা লাঘব করে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, জাহান্নামের অনল কুণ্ডের মধ্যেও তার জন্য তার শাহাদাত আঙুলির মাধ্যমে তৃষ্ণা নিবারণকারী পানির ব্যবস্থাও করা হয়। কারণ, সে এই দিনেই প্রিয় ভ্রাতুস্পুত্র হজরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর জন্ম লাভের শুভসংবাদ শুনে আনন্দিত হয়ে স্বীয় বাদী মত্তবিয়াকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করে দিয়েছিল।

আবু লাহাব সারা জীবনভর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে দুশমনী করে আল্লাহপাকের অভিশাপগ্রস্ত হয়েও রাসুল (সা.)-এর জন্মের শুভসংবাদ শুনে আনন্দিত হয়ে কেবলমাত্র একটি ভালো কাজ করে যদি আল্লাহপাকের এতখানি কৃপা দৃষ্টি লাভ করতে পারে, তাহলে ওই সকল লোক কতখানি সৌভাগ্যবান এবং আল্লাহতায়ালার নেয়ামত ও রহমত লাভে ধন্য হবে, যারা পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনে আনন্দিত হওয়াসহ আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর ঈমান এনেছে। পরিপূর্ণরূপে আল্লাহর ও রাসুল (সা.)-এর আদেশ-নিষেধ মেনে চলেছে এবং প্রতি বৎসর রাসুল (সা.)-এর জন্মের শুভদিন। (ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী) আনন্দ ও খুশির সাথে পালন করেছে? তবে, এ আনন্দোৎসব দুনিয়ার অন্যান্য আনন্দোৎসবের মতো নয়। বরং এটা- সম্পূর্ণরূপে পবিত্র ভাবধারা পুষ্টআত্মিক আনন্দ। এ আনন্দোৎসব ইসলামী শরিয়তের নীতিমালা ও সীমারেখার ভেতরে থেকেই পালন করতে হবে। এর অন্যথা করা যাবে না।

স্মরণ রাখা দরকার যে, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবীর উৎসব-উদযাপনের মূল লক্ষ্য হলো- দুনিয়ার বুকে পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে-প্রচারণা করা এবং তাঁর আদর্শ ও সুন্নত অনুসরণ ও অনুকরণের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা, এমনকি রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর আহলে বায়াতসহ সাহাবায়ে কেরামের প্রতি প্রেম, ভালোবাসা ও অনুরাগ সৃষ্টি করা এবং আল্লাহ জাল্লা শানুহুর দরবারে একান্তভাবে আত্মসমর্পণ করার অনুপ্রেরণা প্রদান করা। জনৈক মরমি কবি কত সুন্দরইনা গেয়েছেন : ‘দেখরে চেয়ে, প্রেম সাগরে, প্রেমিক সুজন, ভেসে যায়।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন