শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করলেও ভ্যাকসিন প্রদানের অনিশ্চয়তায়

অভিভাবক ও শিক্ষক মন্ডলীর স্নায়ু চাপ বাড়ছে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ২:৪৯ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে একে একে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করলেও করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন প্রদানের অনিশ্চয়তায় অভিভাবক সহ শিক্ষক মন্ডলীর স্নায়ু চাপ ক্রমশ বাড়ছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল কলেজ সমূহে সীমিত ক্লাস শুরুর পরে আগামি ২১ অক্টোবর থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির হলসমূহ খুলে দেয়া হয়েছে। তবে শুধুমাত্র একডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণকারীরাই হলে ওঠার সুযোগ পেয়েছেন।

কিন্তু এখন পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ১৮ ও তদুর্ধ্ব কত ছাত্র ছাত্রী ভ্যাকসিন লাভ করেছে, তা বলতে পারছেন না কেউ। এমনকি অবশিষ্ট শিক্ষার্থীরা কবে কিভাবে ভ্যাকসিন পাবে তাও সবার অজানা। এখনো যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র পায়নি, তাদেরকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার বিষয়টিও সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে আছে।

বরিশাল বিশি^বিদ্যালয়ের ভিসি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের দ্রুত এনআইডি প্রদান সহ জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করে চললেও খুব অগ্রগতি হয়নি বলে জানা গেছে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবকগণও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু তেমন কোন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না।

তবে আগামি সপ্তাহে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন প্রদানের সিদ্ধান্তের কথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানালেও ত নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারেন নি বরিশাল বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক সহ দক্ষিণাঞ্চলের সিভিল সার্জনগণও। ইতোপূর্বে শুধুমাত্র মহানগরী এলাকায় এ ধরনের ভ্যাকসিন প্রদানের কথা বলা হলেও দক্ষিণাঞ্চলের অভিভাবকগণ তা শহর থেকে গ্রামেও প্রদানে দাবী জানিয়েছেন।

দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৬ হাজার ২৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করোনা মহামারীর পূর্বকালীন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৩২ হাজার ১৬২ জন। এছাড়া ১ হাজার ৬৩৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২২৮টি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ১৬৭টি বিভিন্ন ধরনের মাদ্রাসায় বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা আরো প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার। এর বাইরে বরিশাল ও পটুয়াখালী বিশ^বিদ্যালয় ছাড়াও এ দুটি জেলায় মেডিকেল কলেজ, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও এ অঞ্চলের ৩টি পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট সহ স্নাতক ও স্নাতক সম্মান পর্যায়ের আরো বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়নরত।
সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ লাখ ছাত্র-ছাত্রী দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত থাকলেও তাদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় বাদ দিলে প্রায় ৪ লাখ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগণ। বিশেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও স্বাস্থ্যের ডিজি’র বক্তব্য অনুযায়ী যত দ্রæত সম্ভব ১২ বছর ও তদুর্ধের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনার বিষয়টি বাস্তবায়নের দাবী করেছেন অভিভবাকগন। পাশাপাশি ১৮ বছরের উর্ধ্বের যেসব ছাত্র-ছাত্রী এখনো এনআইডি পায়নি, তাদের দ্রæত তা বিতরণ সহ বিকল্প যে কোন ব্যবস্থায় ভ্যাকসিনের আওতায় আনারও তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হলেও জুলাই মাসের প্রথম থেকে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদাভাবে তা প্রদান শুরু হয়। পরবর্তীতে বরিশাল ও পটুয়াখালী বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদেরও ভ্যাকসিনের আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে এ দুটি বিশ^বিদ্যলয়ের কতভাগ ছাত্র-ছাত্রী ভ্যাকসিন গ্রহন করেছে তা বলতে পারেননি এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠআনের দায়িত্বশীল মহল। এমনকি অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও ১৮ বছর ও তদুর্র্ধের ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষকমন্ডলীর কতভাগ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে সে বিষয়েও কেউ কিছু বলতে পারছেন না। এমনকি শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পর্যাযের কর্র্মকর্তাদের কাছেও ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোন পরিসংখ্যান নেই।
পাশাপাশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণে শিক্ষা বিভাগের বাইরে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিবিড় নজরদারীর বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন একাধিক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগণ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন