দক্ষিণাঞ্চলে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় ২৭ ভাগ মানুষকে ইতোমধ্যে করোনা ভ্যাকসিনের দুই ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। ১ম ডোজ প্রদান করা হয়েছে প্রায় ৩০ ভাগ মানুষকে। গত শুক্রবার থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সহস্রাধিক কমিউনিটি ক্লিনিকে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হয়েছে, চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। পাশাপাশি উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স ও হাসপাতাল ছাড়াও বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব পৌরসভায় ওয়ার্ডভিত্তিক ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৩০ ভাগ মানুষকে দুই ডোজ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার ব্যাপারে আশাবাদী স্বাস্থ্য বিভাগ। ডিসেম্বরের মধ্যে ১৮ ঊর্ধ্ব অন্তত ৪০ ভাগ মানুষকে করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গত বছর ১১ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম করেনা রোগী শনাক্ত হয়। মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। গতকাল পর্যন্ত সরকারি হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৬৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৫ হাজার ২৭৮ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত গড় শনাক্তের হার ২০.৩৫% হলেও চলতি মাসে তা প্রায় ১%-এর নিচে নেমে এসেছে। অথচ গত জুলাইয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে শনাক্তের হার প্রায় ৭৫% এ উঠে গিয়েছিল। গতকাল রোববার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে মোট মৃত্যু হয়েছে ৬৭৯ জনের। গড় মৃত্যুর হার ১.৫০%।
তবে গত মাসে দক্ষিণাঞ্চলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল মাত্র দু’জন। যা জুলাই মাসে ছিল প্রায় দেড়শ’। ওই মাসে আক্রান্তের সংখ্যাও ছিল প্রায় ১৫ হাজার। অথচ গত মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ২১৭ জন। আর চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৫ জনে। কোন মৃত্যু সংবাদ নেই।
প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার দক্ষিণাঞ্চলে ১৮ ও তদুর্ধ্ব বয়সের জনসংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলা সদরে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম ডোজের প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হলেও দুটি ডোজ সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষের দেহে। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীর দুই ২ লাখ ১২ হাজার জনের দেহে দুই ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান সম্ভব হয়েছে বলে নগর ভবন জানিয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী গতকাল রোববার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে যে ৪৫ হাজার ২৭৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে ভোলাতেই ৬ হাজার ৮৫৯ জন আক্রান্ত ও ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ২২৪। মারা গেছেন ১০৯ জন। পিরোজপুরে ৫ হাজার ২৮৯ জন আক্রান্তের মধ্যে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝালকাঠিতে ১৯ হাজার ৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ হাজার ৬৫৩ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট এ জেলাটিতে সংক্রমণ হার সর্বাধিক ২৪.৩৮%। জেলাটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৯ জন। সর্বাধিক মৃত্যুহারের বরগুনাতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৫৫ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৭ জন মারা গেছেন। গড় মৃত্যুহার ২.৪৫%। অথচ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে গড় মৃত্যুহার এখনো ১.৫০%। অপরদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জনসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৩ হাজার ৫১৫ জন। গড় সুস্থতার হার এখন ৯৬.১১%।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন