হবিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আসছে বিএনপি পরিবারের সন্তানরা। এমন গুঞ্জণ ছড়িয়ে পড়েছে জেলাব্যাপী। এতে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, যারা পদ পাচ্ছেন বলে গুঞ্জণ উঠেছে তাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাউন্সিল সফল ভাবে সম্পন্ন হয়। এতে কমিটির পদ প্রত্যাশীরা হলেন, নজরুল ইসলাম শামীম, বাবুল চৌধুরী, কেএম শাহীন, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান, মাহবুবুর রহমান সানী, শেবুল আকমেদ, সাদিকুর রহমান মুকুল, ফয়জুল বশির চৌধুরী, মনির হোসেন সুমন।
কমিটি ঘোষণা না হলেও জেলা কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে আসছেন মাহবুবুর রহমান সানী ও সাদিকুর রহমান মুকুল এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তাদের দুইজনের পরিবারের লোকজন বিএনপির বড় বড় পদে রয়েছেন। মাহবুবুর রহমান সানীর পুরো পরিবার বিএনপি ঘরনার রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার পিতা হাফিজুর রহমান (লিচু) ১৯৮২ সালে বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ভিপি ছিলেন, জাসদ ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে। জাসদ ছাত্রলীগের হাফিজ-সমশের পরিষদ ছাত্রলীগের কাদের-জাহির পরিষদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিল। জাহির এখন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য। তখন জাসদ ছাত্রলীগের দাপটে হবিগঞ্জে ছাত্রলীগ কোণঠাসা ছিল। হাফিজুর রহমান লিচু পরবর্তী সময়ে কৃষি ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) এর ২০০৪ সালে গঠিত সিলেট বিভাগীয় কমিটির আহবায়ক ছিলেন (বিএনপি পন্থী)। মাহবুবুর রহমান সানীর আপন চাচা মফিজুর রহমান বাচ্চু বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া সানীর আপন চাচাতো ভাই আরিফুর রহমান রাব্বি বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাক। মাহবুবুর রহমান সানীর আপন চাচাতো দাদা আব্দুল হান্নান ফরিদ হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক আহবায়ক, সদস্য আহবায়ক কমিটি হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি। অ্যাডভোকেট ফাতেমা ইয়াসমিন (মাহবুবুর রহমান সানীর আপন খালা, ফাতেমা ইয়াসমিনের বাসায় সানীর বসবাস) হবিগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক এবং হবিগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য। গত সাত-আট মাস আগে হবিগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির পদে আসীন হয়ে সবাইকে চমকে দেন সানী। এবার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ পদ পাচ্ছেন বলে গুঞ্জণ উঠেছে।
এদিকে আরেক নেতা সাদিকুর রহমান মুকুলও বিএনপি পরিবারের সন্তান।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা ইনকিলাবকে বলেন, সানী এবং মুকুল তারা ছাত্রলীগ করতো। কিন্তু তাদের পরিবার বিএনপি ঘোরানার এবং আত্মীয়-স্বজন বিএনপির বড় বড় পদে রয়েছেন। তবে কমিটি দিবে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ, তাই এক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে ত্যাগী ও আসল আওয়ামী লীগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন