গুলশানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার পিস্তলের গুলিতে দু’জন আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গুলিতে আহত আমিনুল ইসলাম গতকাল সোমবার সকালে গুলশান থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আবদুল ওয়াহিদ ওরফে মিন্টুসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য দুই আসামি হলেন-আরিফ হোসেন ও তার ভগ্নিপতি মনির আহমেদ।
গুলশান থানার এসআই শাকির আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, আমিনুলের করা মামলার তিন আসামি গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। এ ছাড়া মামলার বাকি দুই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। ভুক্তভোগী বিকাশ দোকানি হাবিবুর রহমান আলিফ ও আশপাশের দোকানিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, রোববার বিকেল ৪টার দিকে আরিফ হোসেন বিকাশ করার জন্য গেøারিয়া জিন্স ক্যাফের পাশে আলফা স্টোর নামে একটি দোকানে আসেন। তিনি দোকানিকে বলেন, আপনি ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন, আমি টাকা দিচ্ছি। এতে দোকানি তার দেয়া নম্বরগুলোতে টাকা পাঠান। কিন্তু টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন আরিফ। এতে দোকান মালিক আরিফকে আটক করে বলেন, আপনি টাকা না দিয়ে যেতে পারবে না। এক পর্যায়ে আটক অবস্থায় আরিফ তার ভগ্নিপতি মনির আহমেদকে কল করে বিষয়টি জানান।
কল পেয়ে মনির হোসেন তার বন্ধু আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুসহ আরও চার-পাঁচজনকে নিয়ে ওই দোকানে আসেন। তারা আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা চালান। কিন্তু আশপাশের দোকানিরাও তাকে ছাড়তে চাইছিলেন না। আর এমন সময় মিন্টু পিস্তল বের করে সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়েন। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশ ও গুলশান শপিং সেন্টারের দোকানিরা জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ওয়াহিদ একপর্যায়ে ক্ষমতার দাপট দেখানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ ও প্রশাসনে তার লোক আছে, কেউ তার কিছু করতে পারবে না এমন হুমকিও দেন। কিন্তু ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ না করলে আরিফকে ছাড়া হবে না, ব্যবসায়ীরা এমনটি জানিয়ে দেন। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে ওয়াহিদ পকেট থেকে পিস্তল বের করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। এতে জটলার মধ্যে থাকা একজন গাড়িচালক ও ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হন। তখন ওয়াহিদ দৌড়ে শপিং সেন্টারের পাশের একটি রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়েন। সেখানেও পিস্তল বের করে লোকজনকে হুমকি দিতে থাকেন। পরে পুলিশ এসে ওয়াহিদ, মনির ও আরিফকে আটক করে গুলশান থানায় নিয়ে যায়।
গুলশান থানার ওসি ফরমান আলী বলেন, যে পিস্তল দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল ওয়াহিদ গুলি করেছেন, সেটি তার নামে লাইসেন্স করা। ২০১৬ সালে এ অস্ত্রের লাইসেন্স করা হয়। মেয়াদ শেষে ২০২১ সালে লাইসেন্সটি নবায়ন করেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন