আজ থেকে ৫৫ বছর আগে আমেরিকায় যখন প্রিমিয়ার শো হয়েছিল দুনিয়া কাঁপানো টেলিভিশন সিরিয়াল ‘স্টার ট্রেক-অরিজিনাল সিরিজ’-এর তখন তার বয়স ছিল ৩৫। মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণের জন্য শুধুই বেছে নিতে পেরেছিলেন সিরিয়ালের একটি বড় চরিত্র, অভিনয়ের জন্য। ক্যাপ্টেন জেমস কার্কের মতো একটি অসমসাহসী চরিত্র। যা তাকে রাতারাতি বিশ্ববিখ্যাত করে দিয়েছিল।
কানাডার সেই অভিনেতা উইলিয়াম শাটনার বুধবার মহাকাশে গেলেন ৯০ বছর বয়সে। ধনকুবের জেফ বেজসের সংস্থা ব্লু অরিজিন-এর বানানো ‘নিউ শেফার্ড’ রকেটে চেপে। মহাকাশে প্রবীণতম হিসাবে তার নামও লেখা হয়ে গেল ইতিহাসে। ব্লু অরিজিন-এর তরফে জানানো হয়েছে, টেক্সাসের ভ্যান হর্নের মহাকাশ বন্দর থেকে শাটনার এবং তার তিন সঙ্গীকে নিয়ে নিউ শেফার্ড রকেটের উৎক্ষেপণ হয়েছিল বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৮টার কিছু আগে। সেই রকেটই শাটনার এবং তার সঙ্গী তিন জনকে পৌঁছে দেয় ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরে আকাশ এবং মহাকাশের প্রান্তসীমায়।
আক্ষরিক অর্থে মহাকাশচারী নন, এমন মানুষদের নিয়ে এটাই ছিল ব্লু অরিজিন-এর দ্বিতীয় ‘সাবঅরবিটাল ফ্লাইট’। প্রথমবার ১০ জুলাইয়ে গিয়েছিলেন বেজোস স্বয়ং। সঙ্গী হয়েছিলেন তার ভাই মার্ক, নাসার সাবেক মহিলা মহাকাশচারী ওয়ালি ফাঙ্ক এবং নেদারল্যান্ডসের কিশোর অলিভার দায়েমেন। বেজোসের সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, স্টার ট্রেক-এর হইচই ফেলে দেয়া অভিনেতা ১১ মিনিটের কিছু বেশি সময়ের মহাকাশ-ভ্রমণে ভরশূন্য অবস্থায় ছিলেন চার মিনিট। তার পর তিন সঙ্গীকে নিয়ে নিরাপদেই তিনি ফিরে এসেছেন টেক্সাসে। মহাকাশ থেকে ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আনন্দ আর গভীর বিস্ময়ে আপ্লুত স্টার ট্রেক-এর অভিনেতা।
মহাকাশে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (এনবিসি ‘-এর ‘টুডে শো’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শাটনার বলেছিলেনন, ‘মহাকাশ নিয়ে কল্পবিজ্ঞানভিত্তিক ফিল্মে অনেক আগেই দাপটে অভিনয় করেছি, ঠিক কথা। কিন্তু তাতে মহাকাশের গভীরতা, ব্যাপকতা বুঝতে পারিনি। এ বার আমার মহাকাশ ভ্রমণ সেই গভীরতা, ব্যাপকতা বুঝতেই। তার কাছে পৃথিবী কতই না তুচ্ছ, তা মহাকাশ থেকে বুঝে নিতে মহাকাশে গিয়েছিলাম।’ গত জুলাইয়েই আর এক ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসনও মহাকাশে ঘুরে আসেন তার সংস্থা ‘ভার্জিন গ্যালাক্টিক’-এর মহাকাশযানে চেপে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন